নাটোরের লালপুরে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাঠে রেখেই মাত্র ৫২ কর্মদিবসে মাড়াই বন্ধের ঘোষণা দিলো মিল কর্তৃপক্ষ। ২০২২-২০২৩ চলতি মৌসুমে আখের সরবরাহ না পাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়ে শত কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আখ মাড়াই কার্যকম বন্ধ ঘোষণা দিলো কর্তৃপক্ষ।
চলতি মৌসুমে ৫২ কর্মদিবসে ১৫ জানুয়ারি, এই মিলে মাড়াই করা হয়েছে প্রায় ৮১ হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন আখ। তবে কারখানার অভ্যন্তরে চিনি উৎপাদনকালীন সঞ্চি রস থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চিনি উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় চার হাজার ২০০ মেট্রিক টন। চিনি আহরণের হার ছিল শতকরা ৫ দশমিক ৩৪ ভাগ।
মিল সূত্রে বলছে, চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই শুরু হয় গত ২৫ নভেম্বর। চলতি মৌসুমে মিল এলাকায় ১৮ হাজার ১০০ একর জমিতে দুই লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন আখ উৎপাদিত হয়।
এর মধ্যে এক লাখ ৪০ মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারণ করা হয় ৯ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। চিনি আহরণের হার ধরা হয় শতকরা ৭ ভাগ।
কৃষকরা জানান, সুগার মিলে ১৮০ টাকা মণ দরে আখের দাম দেয়। কিন্তু গুড় উৎপাদনকারীরা জমি থেকে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা মণ দরে আখের দাম দিচ্ছন। ফলে সুগার মিলে আখ দিলে কৃষকদেও বড় অংকের টাকা লোকসান গুনতে হয়। আখ চাষি নেতা আনসার আলী দুলাল বলেন, কৃষকরা সাময়িক লাভের আশায় বেশী দাম পাওয়ায় গুড় উৎপাদনকারীদেও নিকট আখ বিক্রয় করছেন। তবে সুগার মিলের স্বার্থ তাদেও দেখা উচিৎ। কারণ মিল বন্ধ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যাবে আখ চাষ।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল আজম বলেন, চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত আখ উৎপাদনে চাষিদের সার-বীজ দিয়ে সহায়তা করা হয়। কিন্তু তারা আখ সুগার মিলে সরবরাহ না করে বেশী দামে গুড় উৎপাদনকারীদের কাছে আখ বিক্রি অব্যাহত রাখা এবং সুগার মিলে আখ সরবরাহ না করায় কষ্ট নিয়ে মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, ১৫ জানুয়ারিতে আখ মাড়াই বন্ধ করে দিলেও কারখানার রস থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চিনি উৎপাদন হয়েছে চার হাজার ২০০ মেট্রিক টন ।
তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আখের দাম বাড়ানোসহ কৃষকদের বিভিন্ন দাবির ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। আশা করি, মিল জোন এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা ভেবে চাষিরা আগামীতে বেশি বেশি আখ মিলে সরবরাহ করবেন।
বিডি প্রতিদিন/এএ