দ্রুত বাড়ি ফেরার কথা দিয়েছিলেন পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে। কিন্তু জীবিত আর বাড়ি ফেরা হলো না মোটরসাইকেল চালক সারোয়ার হোসেনের (৪৫)। নিখোঁজের একদিন পর তার গলাকাটা লাশ ও মোটরসাইকেল মিলল হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া এলাকার ভারতীয় সীমানায়।
নিহত সারোয়ার হোসেন হালুয়াঘাট পৌর শহরের ব্যাপারী এলাকার আ. গফুরের ছেলে।নির্মম এমন হত্যাকা্ণ্ডে নির্বাক পরিবার।
বুধবার রাতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) পতাকা বৈঠক শেষে লাশ গ্রহণ করে হালুয়াঘাট থানা পুলিশ। এর আগে পরিবারের পক্ষে নিহতের লাশ শনাক্ত করেন বড় ভাই জাকির হোসেন। সুরতহাল রিপোর্ট প্রক্রিয়া শেষে বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতাল মর্গে লাশ পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন এসআই সাইদুজ্জামান।
থানা পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের ন্যায় গেল মঙ্গলবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে তার একমাত্র পাঁচ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে খাবার ও জামা কিনে দিয়ে জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হন সারোয়ার। শিশু কন্যাকে কথা দিয়েছিলেন, দ্রুত বাড়ি ফিরবেন তিনি। দুই আদিবাসী যুবককে নিয়ে ভাড়ায় পূর্ব গোবড়াকুড়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য বের হন। সেই থেকে আর বাড়ি না ফেরায় সন্ধান করতে থাকে পরিবার।
বুধবার বিকালে গোবরাকুড়া ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় রক্তের দাগ থেকে সন্দেহ দেখা দেয় স্থানীয়দের কাছে। রক্তের দাগ আর ভারতীয় সীমানার সামান্য দূরেই দেখা মেলে গলাকাটা লাশের। ভারতীয় সীমনায় লাশ পড়ে থাকার বিষয়টি স্থানীয়রা বিজিবিকে জানান।
পরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করা হয় থানা পুলিশের কাছে। পরে পরিচয় মিলে নিহত সারোয়ারের।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে হালুয়াঘাট পৌর শহর থেকে দুই আদিবাসী যুবককে ভাড়ায় নিয়ে যান চালক সারোয়ার হোসেন। কিন্তু কীভাবে খুন হলেন এর কিছু কারো জানা নেই।
এদিকে নিহতের স্ত্রী শরুফা খাতুন বলেন, আমার স্বামীর সাথে কারো বিরোধ ছিল না। আমার ছোট শিশুটিকে যারা বাবাহারা করল আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান খান বলেন, দুই দেশের পতাকা বৈঠকের পর নিহতের লাশ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এটি একটি হত্যাকাণ্ড মনে হচ্ছে। নিহতের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ
বিজিবি ও বিএসএফ’র পতাকা বৈঠক শেষে থানা পুলিশের লাশ গ্রহণ