২৭ মে, ২০২৩ ১৯:০০

কোন্দলে ভাগ হয়ে গেল লালপুর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়

নাটোর প্রতিনিধি

কোন্দলে ভাগ হয়ে গেল লালপুর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়

নাটোরের লালপুরে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। লালপুর সদরে আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয় আছে। তারপরও গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদের উদ্যোগে গোপালপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের আরও একটি দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কার্যালয়টি উদ্বোধন করেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান। এতে দলীয় কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগ চার ভাগে বিভক্ত। প্রায় সাত বছর পর গত বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের অনুসারী তৎকালীন সভাপতি আফতাব হোসেনকে আবার সভাপতি করা হয়। আগের সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলীকে বাদ দিয়ে শামীম আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। শামীম আহমেদ জেলার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের অনুসারী। ফলে শুরু থেকেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক তৈরি হয়। দলীয় কর্মসূচিতে তাদের একসঙ্গে দেখা যায় না।

লালপুরে উপজেলা আওয়ামীর লীগের কার্যালয় থাকলেও সেখানে সাধারণ সম্পাদক ও তার অনুসারীরা বসেন না। সভাপতি আফতাব হোসেন ওই কার্যালয় নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানা গেছে।

এমনই প্রেক্ষাপটে কাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান গোপালপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন একটি কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুধু সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। আমন্ত্রণপত্রে বিশেষ অতিথি হিসেবে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রোকসানা মোর্ত্তজা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেনের নাম উলে­খ থাকলেও তারা কেউ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহামেদ সাগর, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম সেন্টু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোর্শেদ আলম, আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ আল হক ভূঁইয়া, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেনসহ দুয়ারিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম লাভলু।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পোস্টে তিনি লেখেন, ২০ বছর ধরে লালপুর বাজারে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এ ব্যাপারে কারও কোনো আপত্তি না থাকা সত্ত্বেও উপজেলা আওয়ামী লীগের জন্য আলাদা কার্যালয় খুলে বিভক্তি ডেকে আনা হচ্ছে।

লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহামেদ সাগর বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাথে পরামর্শ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় নেওয়া হয়েছে।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফতাব হোসেন ঝুলফু বলেন, গত ২০ ধরে লালপুর বাজারে অবস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সকল কর্মকাণ্ড সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় কার্যালয় থাকার পরেও আরো একটি উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধনের ঘোষণা শুনে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে দলের ঐক্যবদ্ধতা বিনষ্ট হচ্ছে। এবিষয়ে নাটোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক কার্যালয় হতে পারে। তিনি আরো বলেন, দলকে সু-সংগঠিত করতে প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের কার্যালয় করা হবে। এতে সভাপতিসহ কারও কারও আপত্তি থাকতে পারে। তবে ভবিষ্যতে সমন্বয় করে নেওয়া হবে।

 

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর