২৭ মে, ২০২৩ ২৩:৪৭

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, ৯ মাস পর গ্রেফতার স্বামী

গাজীপুর প্রতিনিধি

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, ৯ মাস পর গ্রেফতার  স্বামী

গ্রেফতারকৃত মো. মাসুদ রানা

গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় মারধর করে স্বামীকে ঘর থেকে বের করে দেন গার্মেন্টস কর্মী স্ত্রী। এই অপমানের প্রতিশোধ নিতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা করেন তার স্বামী।

ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শনিবার গাজীপুর পিবিআই-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেফতারকৃত মো. মাসুদ রানা (৩৭) নওগাঁ জেলার রাণীনগর থানার উত্তর রাজাপুর গ্রামের মো. ফিরোজ সাকিদারের ছেলে। স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৩৪) নওগাঁর মহাদেবপুর থানার বামনসাতা গ্রামের আয় বাবুর মেয়ে।

পিবিআই এর পুলিশ সুপার মাকছুদের রহমান জানান, প্রেমের সম্পর্কের জেরে প্রায় সাত বছর আগে সমন্ধীর স্ত্রী বুলবুলি বেগমকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন মাসুদ রানা। বিয়ের পর স্ত্রী বুলবুলিকে নিয়ে গাজীপুরের কোনাবাড়ী থানার দেওয়ালিয়াবাড়ী কলেজ গেট এলাকার মিজানের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন মাসুদ রানা। তার স্ত্রী বুলবুলি স্থানীয় এক গার্মেন্টসে হেলপার হিসেবে কাজ করতেন এবং তার স্বামী মাসুদ এলাকায় রিকশা চালাতেন। স্ত্রী বুলবুলি প্রায়ই মোবাইলে বাইরের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলতেন। এতে স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছে বলে স্বামী মাসুদের সন্দেহ হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের দু’জনের মধ্যে এ নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ চলছিল।

পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর কাজ শেষে রাতে বাসায় ফিরে আসলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে স্বামী মাসুদকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন স্ত্রী বুলবুলি। এ অপমান সইতে না পেরে পরদিন সকালে বুলবুলিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মাসুদ। এরপর স্ত্রীর লাশ ঘরে রেখে দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান মাসুদ। পালিয়ে যাওয়ার সময় বুলবুলিকে হত্যা করার ঘটনা জানিয়ে মেজো বোন আছিয়া আক্তার টপিকে ফোন করে দ্রুত রুমে যেতে বলেন তিনি। খবর পেয়ে বুলবুলির বোন টপি দ্রুত ওই বাসায় গিয়ে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে রুমের মেঝেতে গলায় ওড়না পেঁচানো বুলবুলির লাশ দেখেন। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। 

পুলিশ সুপার জানান, থানা পুলিশ তদন্তকালে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পিবিআই গাজীপুরকে দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত) মো. জামাল উদ্দিন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টঙ্গী পূর্ব থানার আরিচপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিহতের স্বামী মাসুদ রানাকে শুক্রবার বিকালে গ্রেফতার করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃত মাসুদ স্ত্রী বুলবুলি বেগম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এর ফলে ঘটনার প্রায় ৯ মাস পর চাঞ্চল্যকর বুলবুলি হত্যার রহস্য উন্মোচিত হলো।  

বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর