প্রতিষ্ঠার পর থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কার্যক্রম। উপজেলায় সরকারি একমাত্র হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পেলেও এখনও রয়ে গেছে নানা সমস্যা। এতে কাঙ্খিত সেবা বঞ্চিত রোগীরা। হাসপাতালটিকে দ্রুত ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। মামলা জটিলতায় ও নির্মাণ কাজে ধীরগতির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বছরের পর বছর বিড়ম্বনায় পড়তে হয় উপজেলাবাসীকে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রায় ১০ বছর পর ২০১৬ সালের ২ মার্চ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম (আউটডোর) বহিঃবিভাগ, ২০১৮ সালের ২২ এপ্রিল ইনডোর (আন্তঃবিভাগ) উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য ও বর্তমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। করোকালীন সময়ে অক্সিজেন সংকটে রোগীদের সুবিধার্থে ২০২১ সালের ৩০ জুলাই নিজস্ব অর্থায়নে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টও উদ্বোধন করেন তিনি। ৩ লক্ষাধিক জনপদের এ উপজেলায় হাসপাতালটি এ অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসা। হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পেলেও প্রয়োজনীয় শয্যা না থাকার পাশাপাশি নানা সমস্যায় রোগীরা পূর্ণাঙ্গ সেবা বঞ্চিত। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রায় দেড় যুগ পার হলেও মামলা জটিলতায় নির্মাণ হয়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির অগ্রভাগের সীমানা প্রাচীর। ফলে রাতের বেলা অরক্ষিত থাকে গোটা হাসপাতাল এলাকা। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সংকট উল্লেখ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা রাতের বেলা নিরাপত্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন। তাছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে নেই প্রয়োজনীয় সারঞ্জামাদি। জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
এদিকে, জলাঞ্চলখ্যাত মনোহরগঞ্জ উপজেলার মানুষের শতভাগ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। মন্ত্রীর এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যা চালু হলে স্বাস্থ্যসেবায় নবদিগন্তের সূচনা হবে বলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জানান।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহরিয়ার মাহমুদ জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে অবকাঠামোগত সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি পেলেই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম শুরু হবে। জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে কাঙ্খিত সেবা প্রদানে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের দাবি জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এএ