১৮ বছর আগে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো অন্তঃসত্ত্বা এক পাগলীর প্রসব বেদনা উঠে। রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামের আমিরুল ইসলামের স্ত্রী আলেয়া বেগম তার বাড়িতে পাগলীর সন্তান প্রসব করার। পিতার খোঁজ ছাড়া ওই পাগলীর সন্তানের নাম রাখা হয় আব্দুল্লাহ। সন্তান প্রসবের পর আব্দুল্লাহকে রেখে চলে যায় ওই পাগলী। আলেয়া বেগম তার ৫ মেয়ের সাথে নিজের ছেলে হিসেবেই লালনপালন করে বড় করেন আব্দুল্লাহকে।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে মা আলেয়া বেগমের সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছেন আব্দুল্লাহ (১৮)। আলেয়া বেগম বলেন, আমি অনেক কষ্টে জুট মিলে কাজ করে আব্দুল্লাহকে বড় করেছি। আমার স্বামী মারা গেছেন ১৬ বছর আগে। ৫ মেয়েকে কষ্ট করে বিয়ে দিয়েছি। বাড়িতে আমি আর আব্দুল্লাই থাকতাম। সারাদিন সে ঘুরে বেড়ায়, কোনও কাজকর্ম করে না। অনেকের সাথে মেলামেশা করলে ও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই শুক্রবার সকালে একটু রাগারাগি করেছি। পরে ভাত খেতে দিয়ে আমি কাজে যাই। দুপুরে এসে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পরে দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতে পাই আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে। ও আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ছিল।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, আব্দুল্লাহ আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আমরা মায়ের মানবিকতা দেখেছি। অর্থনৈতিকভাবে খারাপ অবস্থার মধ্যে থেকেই আলেয়া বেগম নিজের সন্তান মনে করে আব্দুল্লাহকে বড় করেছেন। পরিবারের কারো কোন অভিযোগ নেই। যে কারণে বিনা ময়নাতদন্তে আমরা মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ