ফেনী দাগনভূইয়া উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়ন থেকে মমতাজ বেগম (৫৬) নামে এক নারীর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি জায়লস্কর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডস্থ উওর বারাহিগোবিন্দ গ্রামের সেরাজ মিয়ার বাড়ির প্রবাসী আতাউর রহমানের স্ত্রী।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ৭টা থেকে ১০ টার মধ্যকার যেকোনো সময়ে এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
নিহতের প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার সময় নিহত মমতাজ বেগম ঘরে একা ছিলেন। এ সময় নিহতের বড় ছেলের বৌ তার বাবার বাড়িতে ছিল। তার একমাত্র মেয়ে স্বামীর বাড়িতে ছিল এবং তার ছোট ছেলে ফটোগ্রাফির কাজে ফেনীতে ছিল।
নিহতের দেবরের ছেলে রজিনুল কবির বলেন, নিহতের ছেলে ও আমার চাচাতো ভাই তন্ময় আমাকে ফোন করে বলে সে তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বারবার ফোন করেও পাচ্ছে না। আমার জেঠির সাথে যোগাযোগ করার জন্য আমাকে তাদের ঘরে যেতে বলে। আমি আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে তাদের ঘরে এসে দেখতে পাই তন্ময়ের মা রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে আছে। তন্ময়কে এটা অবহিত করি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমরান হোসেন বলেন, সেরাজ মিয়ার বাড়িতে ডাকাতি হচ্ছে শুনে আমি ছুটে আসি। মেঝেতে লাশ পড়ে আছে এই বিষয়টি সাথে সাথে আমি দাগনভূইয়া থানাকে অবহিত করি। পরবর্তীতে দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ফেনী পুলিশ সুপার জাকির হাসান।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, নিহত জনৈক মমতাজ বেগমের মৃতদেহটি আমি দেখছি। এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি জানার পর দাগনভূইয়া থানার ওসি মহোদয় রাত সাড়ে দশটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন এবং উক্ত বিষয়টি তিনি আমাকে অবহিত করেন। হত্যা সংঘটিত হওয়ার সময়ের বিষয় সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, বুধবার রাত ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে যেকোনো সময়ে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতির সময় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে নাকি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। ইতোমধ্যে মৃতদেহ সুরতহাল করা হয়েছে। সুরতহাল করার সময় আমি দেখেছি নিহতের গলায় ওড়না প্যাচানো ছিল, মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে , গলায় স্বর্ণের চেইন, হাতে স্বর্ণের বালা এবং কানে স্বর্ণের দুল আছে। এছাড়াও নিহতের ঘরের আলমারি খোলা ছিল এবং আলামারির ভিতর থাকা জিনিসপত্র অগোছালো ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার চিত্র আমি দেখতে পেয়েছি। তদন্তের মাধ্যমে উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ষনাক্ত করে অতিদ্রুত জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। ভিকটিমের ছেলে আমাকে বলেছে, পূর্বশত্রুতার জেরে তার মাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত মমতাজ বেগমের দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। নিহতের বড় ছেলে মেহেদী হাসান তুহিন কাতার প্রবাসী, ছোট ছেলে মাহামুদুল হাসান তন্ময় ফেনী শহরের একটি ইভেন্টের ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল