নওগাঁ হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁর উদ্যোগে শহরের এটিম মাঠ থেকে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এটিম মাঠে এসে শেষ হয়।
এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বেলুন ও ফেষ্টুন উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। শোভযাত্রায় একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডি.এম আব্দুল বারী, সাধারণ সম্পাদক এমএম রাসেলসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্য ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৬ ডিসেম্বর পাকিস্থান বাহিনীরা ঢাকায় আত্মসমর্পণ করার খবর শুনবার পরও নওগাঁর পাকিস্থান বাহিনীরা অত্মসমর্পণ করবে না বলে ঘোষণা দেয়। ফলে কমান্ডার জালাল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে পরদিন সকাল ৭টার দিকে প্রায় ৩৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নওগাঁ শহরের দিকে অগ্রসর হন। ১৭ ডিসেম্বর এক শীতের সকালে মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে আসতেই পাকিস্থানী সেনারা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উভয় পক্ষে প্রচন্ড যুদ্ধে পাঁচজন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসরমান ভারতীয় মেজর চন্দ্রশেখর, পশ্চিম দিনাজপুর বালুরঘাট থেকে পিবি রায়ের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী নওগাঁয় প্রবেশ করলে হানাদার বাহিনীর আর কিছুই করার ছিল না। ফলে সকাল ১০টার দিকে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা নওগাঁ কেডি স্কুল থেকে পিএম গার্লস স্কুল, সরকারী গার্লস স্কুল, পুরাতন থানা চত্ত্বর এবং এসডিও অফিস থেকে শুরু করে রাস্তার দু’পাশে মাটিতে অস্ত্র রেখে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে।
তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে স্বাগত জানান। বর্তমান পুরাতন কালেক্টরেট (এসডি) অফিস চত্ত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম