মাদারীপুরের কালকিনিতে বর্ষায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদীর তীব্র স্রোতের মুখে পড়ে ভাঙনে প্রায় ১০টি বসতবাড়ি ও ১ কিলোমিটার ফজলি জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এতে করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে প্রায় নদীর পাড়ের অর্ধশতাধিক কৃষক পরিবার। অনেকেই ভিটেমাটি হারিয়ে অন্য এলাকায় বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া অনেকে রয়েছে ভিটেমাটি হারানোর আতঙ্কে। যে কোন মুহূর্তে নদীগর্ভে বিলিন হতে পারে তাদের বসতবাড়িও।
ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সিডিখান এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও নতুন করে আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। এ এলাকার ফয়জর আলী, হুমায়ন, নুরু, দিদারসহ ১০টি বসতবাড়ি ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে মহব্বত হোসেন, রায়হান ও নজু হোসেনসহ ১০টি পরিবার। ভাঙন আতঙ্কিত পরিবারগুলো তাদের গুরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে পার্শ্ববর্তী কয়ারিয়া এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। নদী ভাঙনে বসতভিটা হারানো অনেকেই পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে জীবন-যাপন করছেন। এ এলাকার ১ কিলেমিটার জুড়ে নদী ভাঙনে গাছপালা, ধান, পাটসহ বিভিন্ন ফসল নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে। অপরদিকে উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকার প্রায় ১৫টি পরিবার রয়েছে আড়িয়াল খা নদী ভাঙন আতঙ্কে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার অনেক কৃষকের রোপণকৃত ধানের জমি নদী ভাঙনে বিলিন হয়েছে। এ এলাকার কৃষকরা রাত পোহালে ঘুম ভেঙ্গে চোখের সামনে দেখছেন তাদের ফসল নদীতে নিয়ে যাচ্ছে।
সিডিখান এলাকার ভাঙন কবলিত তাহেরসহ বেশ কয়েকজন জানান, রাক্ষসি আড়িয়াল খাঁ নদী আমাদের সব কিছুই কেড়ে নিয়ে গেছে। আমাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি এক রাতের মধ্যে নিয়ে গেছে। নিমিষেই আমাদের সব স্বপ্ন বিলিন হয়ে যাচ্ছে।
সাহেবরামপুর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মান্নান ও রানাসহ বেশ কয়েকজন ক্ষোভের সঙ্গে জানান, এই বর্ষাকাল আসলেই আমাদের চিন্তা বেড়ে যায়। বছরের পর বছর আমাদের জমি আড়িয়াল খা নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দেখার মত আমাদের কেউ নেই। আমাদের মত শতশত পরিবার পথের ফকির হয়ে নদী ভাঙনের কারনে এলাকা ছেড়েছে। কিন্তু তাতে কারো কিছু আসে যায় না। শেষ হলে আমরা হচ্ছি।
সিডিখান ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান চানমিয়া শিকদার জানান, নদী ভাঙনের বিষয় আমরা প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে পারলে তাদের অনেক উপকার হত।
সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ সরদার জানান, আড়িয়াল খাঁ নদীতে বছরের পর বছর ভাঙছে। আমরা অনেকবার ভাঙন কবলিতের পাশে দাঁড়িয়েছি। সামনেও তাদের সহযোগিতা করা হবে।
এ ব্যাপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম জুমার দাশ জানান, সরকারিভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে। ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ