বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পর চিরচেনা যানজটে প্রাণ ফিরেছে বগুড়ার।
মঙ্গলবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন সড়কে নেমে আসেন হাজার হাজার মানুষ। চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। পাড়ায় পাড়ায় সাউন্ডবক্সে গান ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা যায় ছাত্র-জনতাকে।
জানা যায়, গত ১৬ জুলাই থেকে সারাদেশে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। দিন দিন সেই আন্দোলন পরিবর্তীত হয়ে সহিংসতায় রূপ নেয়। এরপর ১৮ জুলাই শুরু হয় কমপ্লিট শাটডাউন। এদিন থেকেই বগুড়ায় সহিংসতা তীব্র হতে থাকে। বিক্ষোভ মিছিল, ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগে প্রায় অচল হয়ে যায় বগুড়া শহর। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে শুরু হয় টানা কারফিউ। এ সময় শহরের দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধ রাখা হয়।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ৯ দফা দাবি ঘোষণা করলে শেখ হাসিনার সরকার তাদের উপর দমন-পিড়ন ও গুলিবর্ষণ করে। এসময় আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটলে সারাদেশের মতো বগুড়াও উত্তাল হয়ে ওঠে।
সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় বাঁধভাঙা উচ্ছাসে মেতে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
কোটা আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত থাকলেও প্রায় ২০ দিন পর প্রাণ ফিরেছে বগুড়ার। আবারও যানজট শুরু হয়েছে শহরজুড়ে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলায় শহরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। প্রয়োজনীয় কাজ সারতে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। হুমড়ি খেয়ে পড়েন শহরে। সকাল থেকে বগুড়া শহরের ব্যস্ততম সাতমাথাসহ সবকটি সড়কে রিকশা-অটোরিকশা, ইজিবাইক, আর ব্যক্তিগত গাড়ির দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে।
শহরের সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, চাঁদনী বাজার, ফতেহ আলী মোড়, নবাববাড়ী সড়ক, ঠনঠনিয়া কোচ টার্মিনালের সামনে, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের সামনে, পিটিআই মোড়, মফিজ পাগলার মোড়, ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যানজটে পড়ে মানুষ। তবে এ যানজটে পড়লেও মানুষের তেমন অভিযোগ ছিল না।
এদিকে বগুড়া শহরে কোনও ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ছাত্রদেরকে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। তারা যানজট নিরসনে কাজ করছেন।
উল্লেখ্য, বগুড়া পৌরসভায় পায়ে চালিত প্রায় সাড়ে ৬ হাজার রিকশার লাইসেন্স দেওয়া আছে। কিন্তু শহরজুড়ে এখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইকের দখলে।
বিডি প্রতিদিন/একেএ