নতুন প্রজন্মের দায়িত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডে অবাক নগরবাসী। নগরের যানবানের শৃংখলা রক্ষাসহ পরিচ্ছন্নতায় সকাল থেকে রাত অবধি কাজ করে প্রশংসিত হচ্ছে তারা। কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ও পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করার দৃশ্য দেখে নগরবাসী তাদের সফলতাও কামনা করেছেন।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা বলেছে, দেশপ্রেম ও সদিচ্ছাই থাকলেই পরিবর্তন করা সম্ভব। বৃহস্পতিবার নগরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ, রুপাতলী বাসস্ট্যান্ড, আমতলা মোড় জিরো পয়েন্ট, সদর রোড, ফজলুল হক এভিনিউ, লঞ্চ ঘাট, জেলখানা মোড়, চৌমাথাসহ বিভিন্ন এলাকার জরুরি ও ব্যস্ত সড়কের যানবাহন চলাচলে শৃংখলা রক্ষায় কাজ করছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় নির্দিষ্ট লেন ব্যবহার করাসহ হেলমেট ব্যবহারের তাগিদ দিচ্ছে তারা।
নগরের বটতলা এলাকায় দায়িত্ব পালন করা বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী সাদমান বলেন, আপাতত ট্রাফিক সদস্যরা কর্ম বিরতিতে রয়েছে তাই তারা কাজ করছেন। কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নেই এখানে। যাদের ইচ্ছে হচ্ছে তারাই এসে কাজ করছে। দেশের প্রতি ভালবাসা ও জনগনের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে সকলে নিজের ইচ্ছায় অংশ নিচ্ছে। সাধারন জনগন তাদের যথেষ্ট সহায়তা করছে।
বরিশাল মহিলা কলেজের ছাত্রী জান্নাত আরা জানায়, বরিশালের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে সড়কে। সকলেই আগ্রহের সাথে কাজ করছে। প্রথমে শুধু তারা কাজ কররেও বৃহস্পতিবার আনসার সদস্য, বিএনসিসি, স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট সহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা তাদের সাথে যোগ দিয়েছে। পথচারীরা তাদের নির্দেশনা অনুসরন করেই চলাচল করছে। এছাড়া সাধারন জনগন তাদের খাবার, পানি সহ বিভন্ন ভাবে সহায়তা করছে। অনেকেই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানিয়েছে।
নগরের বাসিন্দা মাহাদি হাসান বলেন, আগে অভিভাবকরাসহ সকলের ধারনা ছিলো বর্তমান প্রজন্ম মোবাইল আসক্ত। তাদের ভবিষ্যত নিয়ে সবাই চিন্তিত ছিলো। কিন্তু তারা বিশাল এক শক্তিকে পরাজিত করে এখন দেশ গড়ার কাজে ব্যস্ত। এখন আর কাউকে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হতে দেখা যায় না।
ব্যাংক কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, বরিশালের সড়ক গুলোতে এমন শৃংখল চলাচল আগে তিনি কখনো দেখেননি। প্রতিটি যানবাহন লেন মানছে, মোটরসাইকেল চালকরা হেলমেট পরিধান করে চলাচল করছে, সিট বেল্ট লাগিয়ে চলছে প্রাইভেট কার চালকরা। ট্রাফিক পুলিশ যা করতে পারেনি তা শতভাগ নিশ্চিত করেছে এই শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষক হেমায়েত উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীরাই প্রকৃত শক্তি তা তারা বারবার প্রমাণ করেছে। সারা দেশের ন্যায় বরিশালের প্রতিটি শিক্ষার্থী প্রশংসার দাবিদার।
অন্যদিকে নগরের বিভিন্ন সরকারি বে-সরকারি স্থাপনার প্রাচীরে অশ্লীল বাক্যের গ্রাফিতি মুছে ফেলতে দেখা গেছে আরেকদল শিক্ষার্থীদের। তারা বলেছে দেশ তাদের, তাই দেশের পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বও তাদের তাই নিজেদের উদ্যোগেই করছেন। একই সাথে ধ্বংসস্তুপ ও আবজর্না পরিচ্ছন্ন করার কাজও করছে আরেকদল শিক্ষার্থী।
বিডি প্রতিদিন/এএম