সুন্দরবনের দুবলার চরের আলোরকোলে অস্থায়ী মন্দিরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূজা অর্চনার মধ্যে দিয়ে চলছে তিন দিনের রাস উৎসব। শনিবার ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাগরের প্রথম জোয়ারের নোনা জলে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই মিলন মেলা।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে শত বছর ধরে চলা আসা এই রাস পুণ্যস্নান প্রতিবছর নভেম্বর মাসের পূর্ণিমার তিথিতে পালিত হয়ে আসছে। এবারও বনবিভাগ ও রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সহযোগিতায় সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে দুবলার চরের আলোরকোলে রাস পূজার জন্য অস্থায়ী রাস মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত রাস উৎসবে যোগ দিতে সুন্দরবনের পাঁচটি নৌপথ ব্যবহার করে প্রায় ৩০ হাজার পুণ্যার্থী পৌঁছে গেছে দুবলার চরের আলোরকোলে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই পুণ্যার্থীর সংখ্যা এবার অর্ধলাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আসা করছেন সুন্দরবন রাস উৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে অস্থায়ী রাস মন্দির সনাতন পুণ্যার্থীর মনোবাসনা পূরণের আশায় পূজা-অর্চনা করেছেন।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, বঙ্গোপসাগগ উপকূলে জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপ দুবলার চরের আলোরকোলে ১৯২৩ সাল থেকে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারী হরিভজন সাধু প্রথমে রাস পূজা ও পূর্নস্নান শুরু করেন। দুই যুগেরও অধিককাল সুন্দরবনে থেকে ফলমূল খেয়ে বেঁচে ছিলেন এই সাধু। ওই সময় থেকে সনাতন ধর্মের লোকেরা প্রতিবছর রাস পূর্ণিমা তিথীতে পূজা ও পুণ্যস্নানে পালনে ছুটে যায় দুর্গম বনে। সুন্দরবনের এই রাস পূজা ও পুণ্য স্নানের ধীরে ধীরে রাস মেলায় পরিনত হয়। কালের বিবর্তনে এই রাস মেলায় পূণ্যার্থী ও দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী মিলে লক্ষাধিক মানুষের উৎসবে পরিণত হয়।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নূরুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রাস উৎসবে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা, হরিণ শিকারিসহ অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বনরক্ষী, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল