পিঠা বাঙালী সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পিঠার স্বাদ শীতকে আরো মোহনীয় করে তোলে। তাই মাঘের স্নিগ্ধ সকালে গোপালগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকরী মহিলা কলেজে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। কলেজ ক্যাম্পাসের ২০টি স্টলে শতাধিক বাহারি পিঠার সমাহার ঘটে। পিঠার স্বাদ গ্রহন করে নেচে গেয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন শিক্ষক,শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সোমবার সকাল ৯টা থেকে দিনব্যাপী চলে এ পিঠা উৎসব।
কলেজের অধ্যক্ষ সেখ বেনজীর আহমেদ বলেন, বাঙালী সংস্কৃতি ধরে রাখতে আমরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। শিক্ষার্থীরা শতাধিক রকমের পিঠা তৈরী করে স্টলগুলোতে পসরা নিয়ে বসেন। এখান থেকে পিঠা প্রেমিরা পছন্দের পিঠা খেয়েছেন। পিঠা উৎসব পাঠ্য কারিকুলামেরই একটি অংশ। উৎসবের আমেজে এতে অংশ নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী উদ্যাক্তা হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাহারি পিঠা তৈরী করে অনেকেই কর্মসংস্থানের পথ খুজে পবে এমনটা প্রত্যাশা করছি।
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোসা. পারভীন সুলতানা বলেন, মাত্র ১ দিনের প্রস্তুতিতে শিক্ষার্থীরা অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। তারা চিতই, পুলি, ভাপা, পাটিসাপটা, রসবড়া, জামাই পিঠা, দুধ পুলি, ভিজানো পিঠা, নকশা পিঠা, পাকন পিঠা, বকুল পিঠা, খির লুচি, নারিকেলের পিঠা, ডিম পিঠা, গোলাপ পিঠা, খির চমচম, নাড়–, চকলেট পিঠা, তেলে ভাজা পিঠা, খেজুর পিঠা, তাল পিঠা, সন্দেস পিঠা, মালপোয়া, ছানার পিঠা, মালাই পিঠা, বরফী পিঠা সহ শতাধিক রকমের পিঠার সমাহার ঘটিয়েছে পিঠা উৎসবে। এ উৎসবে অংশ নিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে সবাই পিঠার স্বাদ গ্রহন করেছেন। সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
বাংলা বিভাগের সহকরী অধ্যাপক মনীন্দ্র নাথ বাড়ৈ মণি বলেন, পিঠা উৎসব সবার প্রাণের উৎসব। সবার অংশ গ্রহনে এটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। নতুন, নতুন অনেক পিঠা এ উৎসবে পরিবেশ করা হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে নতুন প্রজম্মের উদ্ভাবনী প্রতিভা প্রকাশিত হয়েছে। এটিকে পুঁজি করে তারা উদ্যোক্তা হতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
পিঠা স্টলের শিক্ষার্থী তনিমা মাহমুদ বলেন, মা ও দাদির কাছ থেকে তালিম নিয়ে অন্তত ২৫ রকমের পিঠা হাতে বানিয়ে স্টলে প্রদর্শন করেছি। এর স্বাদ গ্রহন করে ভোজন রসিকরা ব্যাপক প্রসংশা করেছেন। পিঠা বাণিজ্যিকভাবে তৈরী করে সাফল্য হওয়া সম্ভব বলে জানান এ শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম চৈতি বলেন, পিঠা উৎসবের স্টলগুলোর স্বাদ ও গন্ধ ছিল অতুলনীয়। পিঠা খেয়ে পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলেছি। নেচে-গেয়ে একটি উৎসবমুখর দিন কাটিয়েছি। পিঠাকে উপলক্ষ্য করে এমন সুন্দর দিন কাটাতে পেরে আয়োজক অধ্যক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে এমন আনন্দঘন আয়োজন করার জন্য অনুরোধ করছি।
বিডি প্রতিদিন/এএম