যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পুলিশের হেফাজত থেকে জুয়েল খান (২৬) নামে হত্যা মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছেন। রবিবার বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। জুয়েল খান মাগুরার শালিখা উপজেলার রামপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর খানের ছেলে। তিনি যশোরের বাঘারপাড়া থানা এলাকার একটি হত্যা মামলার আসামি।
পালিয়ে যাওয়া জুয়েলকে ধরতে যশোর শহরে ঢোকা ও বের হওয়ার সব সড়কে পুলিশ বিশেষ চেকপোস্ট বসিয়েছে। এ ঘটনায় একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে জেলা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানায়, রবিবার সকালে জুয়েল খান ও সহ-আসামি হারুন-অর-রশিদকে আদালতের দ্বিতীয় তলায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। পরে নারী পুলিশ কনস্টেবল সোনালি আক্তার তাদের নিচতলার হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় দৌড়ে পালিয়ে যান জুয়েল। অন্য আসামি হারুনকে হাজতে রেখে বিষয়টি কোর্ট ইন্সপেক্টরের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান সোনালি।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই আলম সিদ্দিকীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আদালত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, পলাতক আসামিকে ধরতে শহরে ঢোকা ও বের হওয়ার সব পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোকেও সতর্ক করা হয়েছে।
একজন নারী কনস্টেবলকে কেন দুটি হত্যা মামলার আসামিকে একা হাজতখানায় নিয়ে যেতে বলা হলো-এ প্রশ্নের জবাবে নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, এ ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর জুয়েল খান ও তার সহযোগীরা যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বুধোপুর গ্রামে চালক আল-আমিনকে হত্যা করে তার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনতাই করেন। পরে র্যাব-৬ খুলনার একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে ওই বছরের ১৫ ডিসেম্বর জুয়েলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং ইজিবাইকের ব্যাটারি, চাকা এবং হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি জব্দ করা হয়।
২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর জুয়েল খান ও হারুনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়। মামলাটি বর্তমানে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এ বিচারাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুয়েল আদালতের মূল গেট দিয়ে বেরিয়ে পাশের মসজিদের পাশ দিয়ে দৌড়ে খড়কি এলাকার দিকে পালিয়ে যান। আদালত চত্বরে উপস্থিত অনেকেই তাকে ধাওয়া করলেও আটকাতে পারেননি।
বিডি প্রতিদিন/এএম