দুই দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে মৌলভীবাজারের নদ-নদীগুলো হঠাৎ ফুলেফেঁপে উঠেছে। জেলার চারটি প্রধান নদ-মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। এরমধ্যে জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে জেলার নিচু এলাকাগুলো প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) ভোর থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিপাত শনিবার (৩১ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে, মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি ২০২ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৮ সেন্টিমিটার নিচে, ধলাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজে ২৫০ সেন্টিমিটার পানি রয়েছে, কুশিয়ারা নদী এখনো শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত বছরের টানা বর্ষণে মনু ও ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছিল। ডুবে গিয়েছিল ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। গৃহহীন হয়ে বহু মানুষ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছিলেন আশ্রয়কেন্দ্রে। স্থানীয়দের দাবি, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো এখনো সম্পূর্ণ মেরামত করা হয়নি। ফলে চলতি মৌসুমে আবার বন্যার শঙ্কা ঘনিয়ে এসেছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন ওয়ালিদ বলেন, জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকলেও বাকি নদীগুলোর পানি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে আছি। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যদি বৃষ্টি থেমে যায়, তাহলে দ্রুত পানি নেমে যাবে।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে। আমরা ৭ উপজেলার ইউএনওদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। কোথাও সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে এবং শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম মজুত আছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম