রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

নকল ভেজালের দৌরাত্ম্য

বাংলাদেশের শতকরা ৪০ ভাগ খাদ্যপণ্যই ভেজাল। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ফাও) এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় গড়ে তোলা দেশের সর্বাধুনিক খাদ্য নিরাপত্তা গবেষণাগারের পরীক্ষায় এ আতঙ্কজনক বিষয়টি উদ্ঘাটিত হয়েছে। দেশে এমন কোনো খাদ্যপণ্য নেই যা নকল ভেজালের থাবা থেকে মুক্ত। এমনকি মসলা পণ্যও ভেজালমুক্ত নয়।

হলুদ, মরিচ, জিরার গুঁড়া ইত্যাদি মসলার নামে আমরা কি খাচ্ছি তা উদ্ঘাটিত হয়েছে ইতোপূর্বে পরিচালিত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর অনুসন্ধানে। তাদের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একশ্রেণীর অসৎ ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার জন্য এসব মসলার সঙ্গে কাপড়ের বিষাক্ত রং, দুর্গন্ধযুক্ত পটকা, মরিচের গুঁড়া, ধানের তুষ, ডাল ইত্যাদি মিশাচ্ছেন। পণ্যের মান ঠিক আছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব বিএসটিআইয়ের। শহরাঞ্চলে তাদের কার্যক্রম সীমিত। গ্রামাঞ্চলে তাও নেই। ফলে গ্রামাঞ্চলে মসলার নামে যা বিক্রি হচ্ছে তার প্রায় শতভাগ ভেজাল। বিএসটিআইয়ের অভিযানে মাঝে-মধ্যে ভেজালকারীদের জরিমানা করা হলেও তা তাদের অপকর্ম বন্ধে কোনো সুফল বয়ে আনছে না। ব্যবসায়ীরা নতুন কায়দায় শুরু করে নকল ভেজালের ব্যবসা। এসব পণ্য কিনে ক্রেতারা শুধু প্রতারিতই হচ্ছেন না, তা ব্যবহার করে মারাত্দক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়েন। ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও সৃষ্টি হচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল নিঃসন্দেহে একটি মারাত্দক অপরাধ। সভ্য দুনিয়ায় এ ধরনের অপরাধ কল্পনা করাও কঠিন। কিন্তু আমাদের মতো দেশে সব কিছুর সঙ্গে ভেজালের একাকার। মূল্যবোধের অবক্ষয় একশ্রেণীর লোভী মানুষকে ভেজালের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করছে। দেশে কোনো ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা ও সুশাসন না থাকায় অপরাধীরা তেমন কোনো সাজা পাচ্ছে না। জনস্বাস্থ্য জিম্মি হয়ে পড়ছে অপরাধপ্রবণ কিছু লোকের হাতে। যার অবসান হওয়া উচিত।

 

সর্বশেষ খবর