শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

শিক্ষকদের গাড়িতে হামলা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দুটি বাসে বোমা হামলার ঘটনা সারা দেশের জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনা শুধু গর্হিত ও নিন্দনীয়ই নয়, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত নজির হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। বুধবার সকালে চট্টগ্রাম নগরী থেকে শিক্ষকদের দুটি বাস বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে হাটহাজারীর ফতোয়াবাদ ছড়ারকুল এলাকায় পরিকল্পিত হামলার মুখে পড়ে। ওঁৎ পেতে থাকা একদল যুবক ব্যারিকেড দিয়ে বাস দুটি থামিয়ে নির্বিচারে ভাঙচুর চালায়। তারা শিক্ষকদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে। এ সময় বাসে থাকা শিক্ষক ও ছাত্রদের আর্তচিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে গেলে দুর্বৃত্তরা সাত/আটটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। ককটেল বিস্ফোরণের ফলে গাড়ির কাচ ভেঙে অন্তত ১৬ শিক্ষক আহত হন। আহতদের কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন মেসে তল্লাশি চালিয়ে ১৬ শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী তাদের কাছ থেকে ১৫টি ককটেল, পাইপগান বানানোর যন্ত্রপাতি, দুই ব্যাগ চাপাতি এবং ককটেল তৈরির বিপুল উপকরণ আটক করেছে। পুলিশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আক্রান্ত শিক্ষক এবং সাধারণ ছাত্ররা এ ঘটনার জন্য শিবিরকর্মীদের দায়ী করেছেন। তবে শিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দলের ঘটনা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবাহী দুটি বাসে হামলার জন্য কারা দায়ী তা যথাযথ তদন্তে উদ্ঘাটিত হতে পারে। তবে যারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। মাত্র কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনে বোমা হামলা ঘটেছে এবং এ জন্য সন্দেহের তীর শিবিরের দিকেই ওঠানো হয়েছে। শিক্ষকদের দুটি বাসে হামলার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলোর সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন এবং ছাত্রলীগ ও বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে মিছিল করেছে। আমরা আশা করব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারীদের চিহ্নিত এবং শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর