শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল ওষুধ

দেশে যে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে তার এক উল্লেখযোগ্য অংশই নকল ও মানহীন। নকল ও মানহীন ওষুধ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁটির জোর এতই বেশি যে, তাদের আইনের আওতায় আনা কঠিন হয়ে পড়ছে। এসব দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের, তারাও উৎকোচের মুখে সব না দেখার ভান করছে। দেশে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধ তৈরি করে প্রায় ২৮০টি কোম্পানি। এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০টি কোম্পানির ওষুধ মানসম্পন্ন বলে মনে করা যায়। চিকিৎসকরা তাদের ব্যবস্থাপত্রে এসব কোম্পানির ওষুধই দেন। মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর ভরসা উৎকোচলোভী কিছু অসৎ চিকিৎসক এবং হাতুড়ে চিকিৎসকরা। তাদের কারণে মফস্বল এলাকার বাজারগুলো মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর দখলে। তবে মানসম্মত ওষুধ কোম্পানির ওষুধ ব্যবহার করেও এখন স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ এসব কোম্পানির ওষুধও অবাধে নকল হচ্ছে। এ নকল প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পেছনে অসৎ রাজনীতিক, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং ওষুধ প্রশাসনের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশ থাকায় তারা প্রকাশ্যে তাদের জাল-জালিয়াতির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার র‌্যাব-১০ এর পরিচালনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এএইচএম আনোয়ার পাশা মিটফোর্ডে দেশের বৃহত্তম ওষুধ বাজার ও কেরানীগঞ্জের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুশিয়ারাবাগের ৩ নম্বর ভবনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ করেছেন। নকল ওষুধ তৈরির হোতা রাসেল নামের এক চিহ্নিত ব্যক্তিকে র‌্যাবের মোবাইল কোর্ট গ্রেফতার করেছে। কেরানীগঞ্জে রাসেলের বাড়িতে তৈরি হতো নামিদামি কোম্পানির নকল ওষুধ। বাড়ির তিনটি বড় আকারের গোডাউন ছিল নকল ওষুধে ঠাসা। রাসেলকে একই অভিযোগে ইতোপূর্বে গ্রেফতার করা হলেও সে ছাড়া পেয়ে যায়। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি ৮ বছর আগে তাকে নকল ওষুধ বিক্রির দায়ে বহিষ্কার করলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের চাপে সমিতি তাকে পুনরায় সদস্য করতে বাধ্য হয়। রাসেল সন্ত্রাসী বাহিনী পোষায় মিটফোর্ড মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ছিল অসহায়। আমরা আশা করব, নকল ওষুধ তৈরির মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের জীবনকে যারা ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দিয়েছে তাদের মদদদানকারী তথাকথিত রাজনৈতিক নেতা ও অন্যদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর