সোমবার, ১৩ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

জলজট ও যানজট

রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির মহোৎসব বন্ধ হোক

অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশনের অভাবে রাজধানীতে বর্ষা হলেই জলাবদ্ধতা নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত রবিবার জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছিল রাজধানীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে জলজট ও যানজটে অচল হয়ে পড়েছিল প্রায় পুরো নগরী। রোজাদার মানুষের জন্য বাড়তি দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছিল জলজট ও যানজটের বিব্রতকর অবস্থা। জলাবদ্ধতা কমাতে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ একের পর এক পরিকল্পনা নিলেও তাতে তেমন কোনো লাভ হচ্ছে না। রাজধানীর জলাবদ্ধতা কমাতে নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, সম্প্রসারণ, খাল সংস্কার, নর্দমা ও বক্স কালভার্ট পরিষ্কারের কাজে শত শত কোটি টাকা ব্যয় হলেও তা দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো সুফল বয়ে আনতে পারেনি। অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে ঘণ্টাখানেক বৃষ্টি হলেই রাজধানীতে জলাবদ্ধতা অনিবার্য হয়ে ওঠে। ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতো নগরায়ণের সর্বক্ষেত্রে যে অব্যবস্থাপনার ছাপ রয়েছে, তার খেসারত দিতে হচ্ছে নগরবাসীকে। অপর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাজধানীর জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। রাজধানীর পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহৃত হতো বেশ কিছু প্রাকৃতিক খাল। এসব খালের সিংহভাগই বেদখল এবং ভরাট হয়ে গেছে। অদ্ভুত এ দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খাল এমনকি নদীও বেদখল হয়ে যায়। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সরকারের ভূমি দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বেতন পেলেও তাদের যোগসাজশেই খাল নদী জলাশয় আত্মসাতের ঘটনা ঘটছে। ফলে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয় রাজধানীতে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় নগরজীবনে। নাগরিকদের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। আমাদের মতে, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনের আগে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে দুই মেয়র জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে হবে। বেদখলকৃত খালগুলো উদ্ধারের উদ্যোগ নিতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ ঘটিয়ে দ্রুত পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত করা দরকার। পাশাপাশি নগরবাসীকে সেবা দেওয়ার নামে প্রায়শই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির যে মহোৎসব চলে সে বদভ্যাসের ইতি ঘটাতে হবে।  অন্তত মাহে রমজানে এ যথেচ্ছতা থেকে সংশ্লিষ্টরা নিবৃত্ত থাকবেন আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর