শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভেজালবিরোধী অভিযান

জনস্বার্থে আরও কঠোর হতে হবে

নকল-ভেজালের বিরুদ্ধে বছরজুড়ে অভিযান চললেও কাঙ্ক্ষিত সুফল মিলছে না। লঘু সাজার কারণে নকল-ভেজালকারীদের দৌরাত্ম্য কিছুতেই থামছে না। সারা দেশে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মানহীন পণ্য। এর ফলে ক্রেতারা যেমন প্রতারিত হচ্ছে, তেমনি হুমকিতে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী ক্রেতাদের ঠকিয়ে মুনাফার পাহাড় গড়লেও তা যেন দেখার কেউ নেই। দেশে উৎপাদিত পণ্যের মান প্রণয়ন, প্রণীত মানের ভিত্তিতে পণ্যসামগ্রী উৎপাদন ও গুণগত মান পরীক্ষা বা বিশ্লেষণ করে মানের নিশ্চয়তা প্রদান বিএসটিআইর কাজ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনও এ কাজের তদারকিতে নিয়োজিত। বিএসটিআই মাত্র ১৫৫টি পণ্য বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষা করে। বাকি পণ্যগুলো বাধ্যতামূলক না হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা এগুলোতে ভেজাল মেশাচ্ছে। দুই সিটি করপোরেশনে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের যে পদ আছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। এ ছাড়া নমুনা সংগ্রহকারীরাও নিয়মিত নন। সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সংখ্যাও অপর্যাপ্ত। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য রয়েছেন সীমিত সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযান পরিচালনার সময় প্রায়ই পুলিশের সংকট দেখা দেয়। এমনিতেই দুর্বল আইনি প্রক্রিয়ায় মানহীন কিংবা ভেজাল পণ্য উৎপাদকদের শাস্তি খুব একটা হয় না। এ ছাড়া পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাগুলোর দক্ষতারও অভাব আছে। দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর থাকলেও তার তত্পরতাও সীমিত। ভেজাল ও মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান অনেকাংশেই রাজধানীতেই সীমিত। ঢাকার বাইরে তত্পরতা নেই বললেই চলে। ভেজাল বন্ধে নকল ভেজাল অপরাধের দণ্ড বাড়াতে হবে। কারাদণ্ডের পাশাপাশি অর্থদণ্ড এমনভাবে বাড়াতে হবে যাতে অপরাধীরা ভয় পায়। প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রধানকে পণ্য ভেজাল রোধের দায়িত্বে সম্পৃক্ত করতে হবে। দেশে নকল ভেজালের দৌরাত্ম্য কীভাবে বাড়ছে তার প্রমাণ মেলে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরিতে যেসব খাদ্যপণ্য পরীক্ষার জন্য যায় তার দুই-পঞ্চমাংশের মধ্যে ভয়াবহ ভেজালের প্রমাণ পাওয়া গেছে।  শিশুখাদ্যেও চলছে যথেচ্ছভাবে ভেজাল। জনস্বার্থে এ ব্যাপারে সরকারকে আইনগত ব্যবস্থা যেমন জোরদার করতে হবে তেমন নকল ও ভেজাল প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোতে লোকবলও বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর