বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জিয়াউল হকের অপকৌশল

উইলিয়াম ক্লাইবোর্ন তার ‘জিয়াস ইসলাম মিটস স্ট্রিক্ট টোলস; পাকিস্তান স্লোলি রিভ্যাম্পস ইটস সোশ্যাল জুডিশিয়াল স্ট্যান্ডর্স’ (ওয়াশিংটন পোস্ট, ডিসেম্বর ২, ১৯৮২) প্রবন্ধে বলেছেন, “জিয়াউল হকের মজলিস-ই-শূরার বেশির ভাগ সদস্য নেওয়া হয়েছে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় স্তরের নেতাদের মধ্য থেকে। তাদের বেশির ভাগকেই টাকা দিয়ে বা বল প্রয়োগ করে সরকারের বশে আনা হয়েছিল।  এভাবেই আইন সভার ইসলামীকরণের কাজ সম্পন্ন হয়।

আগের যে কোনো আইন সভার চেয়ে এই মজলিস-ই শূরার আইনসভায় বেশি সংখ্যক ওলামা ও ইসলামী ক্যাডার রাখা হয়। প্রস্তাবিত কোনো আইন ইসলামী, নাকি ইসলামী নয়, এটাই হবে মজলিস-ই শূরার বিতর্কের বিষয়। মজলিস-ই শূরা অনেকগুলো ড্রাকুনিয়ন আইন প্রসঙ্গে আলোচনা করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আইন ছিল, পতিতাবৃত্তি ও ড্রাগ পাচারের জন্য মৃত্যুদণ্ড প্রদান, জনগণের নৈতিকতা মনিটর করার জন্য ওয়াচডগ কমিটি গঠন, মহিলাদের গহনা ও ঝকমকে ড্রেস পরাকে নিরুৎসাহিত করা, বলরুম নাচ নিষিদ্ধ এবং অপসংস্কৃতির বাহক সব সাহিত্য ও বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। আইনে বলা হয় আপত্তিকর বই ও ম্যাগাজিন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

জিয়াউল হক ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন সুন্নি ইসলামের অনুসারী। পাকিস্তানের সিংহভাগ মানুষও সুন্নি মতাবলম্বী। দেশের এক দশমাংশ অর্থাৎ প্রতি দশজনের একজন শিয়া ইসলামের অনুসারী। সৈয়দ ভালি রেজা নসর তার ‘মিলিটারি রুল, ইসলামিজম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ইন পাকিস্তান’ গ্রন্থে  উল্লেখ করেছেন— “জিয়াউল হক ধর্মীয় অনুপ্রেরণা লাভ ও অর্থনৈতিক সাহায্যের আশায় সুন্নি রাজতন্ত্র সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকে পড়েন। শিয়া নেতা আয়াতউল্লাহ খোমেনীর নেতৃত্বে ইরানে ইসলামী বিপ্লব সংগঠিত হওয়ায় জিয়াউল হকের সময় পাকিস্তানে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। যে কারণে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে।  সৌদি আরব সুন্নিদের এবং ইরান শিয়াদের সংস্থা ও সংগঠনকে ব্যাপক আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে।

জাফর খান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর