বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিক্ষা খাতের নৈরাজ্য

শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিন

দেশের শিক্ষা খাতের সর্বত্রই চলছে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অনাকাঙ্ক্ষিত অবস্থা। প্রাক প্রাথমিক বা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কোনো স্তরই এই নৈরাজ্য থেকে মুক্ত নয়। শিক্ষার সব পর্যায়েই রয়েছে শৃঙ্খলার অভাব। সর্বত্রই বিরাজমান অনিয়ম আর নৈরাজ্য। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও  উচ্চমাধ্যমিক এমনকি উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়েও চলছে সীমাহীন যথেচ্ছতা। সবচেয়ে নাজুক অবস্থা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে। অবৈধ উপায়ে কেউ কেউ এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রিও বাগিয়ে নিচ্ছেন সুযোগ বুঝে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো চলছে লাগামহীনভাবে। ভর্তি নিয়ে নৈরাজ্য, লাগামহীন অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে দেশের অসংখ্য স্কুলের বিরুদ্ধে। অসহায় অভিভাবকদের দীর্ঘ নিঃশ্বাস বা আর্তনাদ স্কুল কর্তৃপক্ষ বা সরকার— কারও শোনার সময় নেই। এসএসসির ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত ফি না নিতে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তা না মানার দুঃসাহস দেখাচ্ছে দেশের স্কুলগুলো। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আউটার ক্যাম্পাসের মাধ্যমে চালিয়ে যাচ্ছে অবাধ বাণিজ্য। ভুলেভরা বই নিয়ে হৈচৈ চললেও তার গ্রহণযোগ্য কোনো সমাধান মিলছে না। হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতি বছর জিপিএ-৫ পেলেও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেছে। শিক্ষা খাতের অব্যবস্থাপনায় এ খাতের ভালো অর্জনগুলোও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা জ্ঞান অর্জন কিংবা জ্ঞান অর্জনের স্পৃহা সৃষ্টির বদলে পরীক্ষানির্ভর হয়ে পড়ছে। কোচিং ও গাইড নির্ভরতার জন্য যা অনেকাংশ দায়ী বলে মনে করা হয়। দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও তা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর বলে বিবেচিত হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এ দেশে অন্তত চারটি পরীক্ষার মোকাবিলা করতে হয় শিক্ষার্থীদের। দুনিয়ার অন্য কোনো দেশে এই তুঘলকি সংস্কৃতির প্রচলন নেই। শিক্ষাব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ছে তা জাতীয় অস্তিত্বের জন্যও হুমকির নামান্তর। শিক্ষা ক্ষেত্রে সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হলে ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।  কমাতে হবে পরীক্ষার বোঝা। কোচিং ও নোট বই নির্ভরতার অবসান ঘটাতেও উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর