সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইয়াবার দুই গডফাদার

ওরা জনপ্রতিনিধি নামের কলঙ্ক

বাংলাদেশের প্রান্তভাগের জনপদ টেকনাফের পরিচিতি ছিল কৃষিনির্ভর এলাকা হিসেবে। মিয়ানমার সীমান্তের পাহাড়, নদী, সাগর ঘেরা এই জনপদের লজ্জাকর নতুন পরিচিতি গড়ে উঠেছে দেশের মাদক সাম্রাজ্যের রাজধানী হিসেবে। দেশের যুবসমাজকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ইয়াবা নামের যে মাদকদ্রব্য তা আসছে মিয়ানমার থেকে। মাদক প্রতিরোধে বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যথেষ্ট সক্রিয়তার পরিচয় দিলেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জিত হচ্ছে না বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোর কবলে পড়ে। টেকনাফের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক দুই শীর্ষ জনপ্রতিনিধি এবং তাদের পরিবার মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রক হিসেবে ভূমিকা পালন করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তীক্ষ নজরও খুব একটা কাজে আসছে না। মাদক ব্যবসার দুই গডফাদার জনপ্রতিনিধির সাইনবোর্ড ব্যবহার করে টেকনাফের সাধারণ মানুষকেও এই ঘৃণ্য ব্যবসার সঙ্গে যেভাবে জড়িত করেছে তা অবক্ষয়ের  উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। টেকনাফের মানুষ যুগ যুগ ধরে মাছ চাষ, লবণ চাষ ও কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন সে এলাকার হাজার হাজার মানুষের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে মাদক ব্যবসা। রাতারাতি ভাগ্য বদলানোর অভিলাসে তারা জড়িয়ে পড়েছে ইয়াবা নামের মাদক ব্যবসার সঙ্গে। যারা ছিল ঠেলাগাড়ির চালক মাদক ব্যবসার বদৌলতে তাদের পক্ষেও কোটি টাকার প্রাসাদ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শত কোটি টাকার মালিকও বনে গেছে এক সময়ের নিঃস্ব পরিবারের সদস্যরা। তাদের এ সমৃদ্ধির বিপরীতে দেশের যুবসমাজের জন্য সৃষ্টি হয়েছে সর্বনাশের অমানিশা। গত কয়েক বছরে দেশের লাখ লাখ তরুণ ইয়াবা নেশায় বুঁদ হয়ে নিজেকে ঠেলে দিয়েছে নিশ্চিত সর্বনাশের দিকে। সরকার মাদক নিয়ন্ত্রণে যে শতভাগ আন্তরিক তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এ আপদ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় করেও যে সাফল্য অর্জন করা কঠিন টেকনাফের তিক্ত অভিজ্ঞতা সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। দেশের যুবসমাজকে ইয়াবা নেশা থেকে রক্ষা করতে হলে এর গডফাদারদের রাজনৈতিক কানেকশন ছিন্ন করার পাশাপাশি তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলার সুযোগ থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর