শিরোনাম
প্রকাশ: ০০:০০, মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

ভাষা আন্দোলন ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ

বাহালুল মজনুন চুন্নু
Not defined
প্রিন্ট ভার্সন
ভাষা আন্দোলন ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ

‘পাড়ায় পাড়ায় নাটক ব্রতচারী নাচ/মুকুলের মাহফিল-কৃষ্ণচূড়া আর পলাশ ফুল/আর সবুজের স্বরগ্রাম/কলাপাতা-সবুজ, ফিরোজা, গাঢ় সবুজ, নীল/তারই মধ্যে বছরের একটি দিনে/রাস্তায় রাস্তায় উঠে আসে মুষ্টিবদ্ধ হাত/রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই! রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই! একুশে ফেব্রুয়ারি কবিতার এই কয়েকটি ছত্রের মধ্য দিয়ে আবদুল মান্নান সৈয়দ বায়ান্নোর রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত রাজপথের দৃশ্যপট এঁকেছেন। এরপরের দৃশ্যপট খুঁজে পাওয়া যায় আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর মাগো ওরা বলে কবিতার— ‘চিঠিটা তার পকেটে ছিল/ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা/মাগো, ওরা বলে/সবার কথা কেড়ে নেবে/তাই কি হয়?/তাই তো আমার দেরি হচ্ছে।/তোমার জন্য কথার ঝুড়ি নিয়ে/তবেই না বাড়ি ফিরবো...’ এই কয়েকটি লাইনে। আর ভাষা আন্দোলনের সবশেষ দৃশ্যপট আমরা খুঁজে পাই একুশ নিয়ে লেখা প্রথম কবিতার কবি মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি কবিতায়। ভাষার দাবিতে যাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে রাজপথ, তাদের মৃত্যুতে কান্নার পরিবর্তে যারা বাঙালি ও বাংলাভাষাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চায়, তাদের ফাঁসির দাবি জানানোর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে প্রতিবাদের আগুনে ঝলসে ওঠা বাঙালির চিরন্তন প্রতিবাদী চেতনা। আর এ তিনটি দৃশ্যপটের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রভাষার দাবি আদায়ের আন্দোলনে তিনি যেমন ছিলেন সক্রিয় এক কর্মী, তেমনি সাংগঠনিক নেতাও। বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা ও বঙ্গবন্ধু শব্দগুলো একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই এদেশের অগণিত মানুষের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের একটা প্রাণের সংযোগ ঘটেছিল। আর সেই সংযোগের মধ্য দিয়েই এক সময় অর্জিত হয়েছিল গৌরবোজ্জ্বল মহান স্বাধীনতা, প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।

ভাষা চিন্তা-চেতনা, মনন ও অন্তরের ভাব-ভাবনা প্রকাশেরই কেবল বাহনই নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে দেশ ও জাতির আত্মপরিচয়, সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে নিজস্ব স্বকীয়তা। হাজার হাজার বছর ধরে বাংলাভাষা প্রকাশ করে যাচ্ছে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব, স্বকীয়তা। কিন্তু সাতচল্লিশে ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও নৃতত্ত্বগত কোনো মিল না থাকার পরও চৌদ্দশ মাইল ব্যবধানের দুটি পৃথক ভূখণ্ডকে মিলিয়ে একসঙ্গে পাকিস্তান নামক উদ্ভট রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল শুধু ধর্মভিত্তিক সাদৃশ্যতার দোহাই দিয়ে। আর সেই রাষ্ট্র গঠনের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই দুরভিসন্ধিমূলকভাবে বাঙালির ওপর মনস্তাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক আঘাত হানার উদ্দেশ্যে এবং বাংলাভাষা ও সাহিত্যের হাজার বছরের ঐতিহ্যকে মুছে ফেলার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে করাচির শিক্ষা সম্মেলনে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষদের ধর্মের দোহাই দিয়ে প্রতারিত করে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। অথচ সেই সময়টায় বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠী ৫৬%, যেখানে উর্দু ভাষাভাষীর সংখ্যা ৭.২%। এই অযৌক্তিক দাবির বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে প্রতিবাদ জানায় তমদ্দুন মজলিশ যাতে সাতাশ বছরের তরুণ জননেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা ছিল অনন্য।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অস্তিত্বের স্বপ্নের পুরোধা প্রবাদ পুরুষ। মাতৃভাষা, মাতৃভূমি এবং তার সংস্কৃতিই একটি জাতির অস্তিত্বের স্মারক, এ বিষয়ে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ সচেতন। তিনি বলতেন, ‘আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা। বাংলার কৃষ্টি, সভ্যতা, বাংলার ইতিহাস, বাংলার মাটি, বাংলার আকাশ, বাংলার আবহাওয়া, তাই নিয়ে বাংলার জাতীয়তাবাদ।’ তিনি বুঝেছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালিদের মেধাশূন্য করতে সাংস্কৃতিক শোষণের পথ বেছে নিয়েছে। আর তাই সর্বাগ্রে আঘাত হেনেছে বাংলাভাষার ওপর। রোমান অক্ষরে বাংলা ভাষার চর্চা, উর্দু, আরবি এবং ফার্সি শব্দের সমবায়ে বাংলা শব্দ ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার প্রচেষ্টার সঙ্গে সঙ্গে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণার মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিকগতভাবে বাঙালিকে নিঃস্ব করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল পশ্চিম পাকিস্তানিরা। বাঙালির সাংস্কৃতিক চেতনার মাঝে নিজস্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রভাষা বাংলা করা সেই সময় ছিল খুবই জরুরি। এই সত্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুধাবন করেছিলেন নিজের বিচক্ষণতা দিয়ে। আর তাই আজন্ম মাতৃভাষাপ্রেমী এই মহান নেতা সাতচল্লিশ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্ব থেকেই বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় আত্মনিয়োগ করেন। দুর্ভাগ্য, কখনো কখনো ক্ষমতার মোহ, পশ্চাত্পদ চিন্তা এবং দেশি-বিদেশি নানা কায়েমি স্বার্থে কুচক্রী মহল ও তাদের পোষা কথিত বুদ্ধিজীবীরা ইতিহাসকে বিকৃত করার উদ্দেশ্যে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে খাটো করে দেখতে চায়। কিন্তু ইতিহাসের পাতা উল্টালেই জাজ্বল্যমান হয় যে, বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনের অন্যতম একজন রূপকার। তার নেতৃত্ব-গুণে বাঙালি জাতির মাঝে জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটায় তারা জেগে উঠে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে রাজপথ কাঁপিয়ে তুলেছিল নির্ভয়ে এবং এর মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল ভিত্তিটা সূচিত হয়ে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর সাংগঠনিক দক্ষতায় বাঙালির আত্মপরিচয় ও আত্মজাগরণের চেতনা যেমন বৃদ্ধি পেতে থাকে, তেমনি বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে এবং অবশেষে স্বাধীনতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয় আর বিশ্বজুড়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের অনন্য স্বীকৃতি-স্বরূপ বাঙালি লাভ করে লাল-সবুজের পতাকা।

 

 

দেশভাগের পরপরই বাঙালি জাতির পিতা পূর্ব বাংলায় প্রত্যাবর্তন করে তমদ্দুন মজলিশের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সরাসরি ভাষা আন্দোলনে শরিক হয়েছিলেন। এ বিষয়ে তার প্রথম জীবনীকার অধ্যাপক ড. মযহারুল ইসলাম বলেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান তমদ্দুন মজলিশকে রাষ্ট্রভাষা সংক্রান্ত বহু কাজে সক্রিয়ভাবে সাহায্য ও সমর্থন করেছিলেন।’ ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তানের কর্মী সম্মেলনে গণতান্ত্রিক যুবলীগ গঠিত হয়েছিল। ওই সম্মেলনে ভাষা বিষয়ক কিছু প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল যাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল। এ বিষয়ে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা শীর্ষক বইতে ভাষাসৈনিক গাজীউল হক বলেছেন, ‘সম্মেলনের কমিটিতে গৃহীত প্রস্তাবগুলো পাঠ করলেন সেদিনের ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান।’ ওই বছরের ডিসেম্বরে ২১ দফা দাবি সংবলিত ইশতেহার প্রণয়ন করা হয়েছিল, যার মধ্যে দ্বিতীয় দাবিটিই ছিল রাষ্ট্রভাষা সংক্রান্ত। এই ইশতেহার প্রণয়নে বঙ্গবন্ধু সহায়তা করেছিলেন এবং তিনি ছিলেন অন্যতম স্বাক্ষরদাতা। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত ছাত্রলীগের ১০ দফা দাবির মধ্যে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবি ছিল অন্যতম। ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষার দাবিতে ধর্মঘট চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তমদ্দুন মজলিশ যে সমাবেশ ও মিছিল করেছিল, তার সমগ্র ব্যবস্থাপনায় বঙ্গবন্ধু বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন।

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক অনন্য অবিস্মরণীয় দিন। রাষ্ট্রভাষার দাবিতে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়েছিল। এদিনের হরতালে বঙ্গবন্ধু নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন এবং পাকিস্তানে প্রথম গ্রেফতার হন, যা তার রাজনৈতিক জীবনকে প্রভাবিত করেছিল। এ বিষয়ে ভাষাসৈনিক অলি আহাদ তার জাতীয় রাজনীতি ১৯৪৫ থেকে ১৯৭৫ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার নিমিত্তে শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ থেকে ১০ মার্চ ঢাকায় আসেন। ১১ মার্চের হরতাল কর্মসূচিতে যুবক শেখ মুজিব এতটাই উত্সাহিত হয়েছিলেন যে, এ হরতাল কর্মসূচি তার জীবনের গতিধারাকে নতুনভাবে প্রবাহিত করে।’ অলি আহাদের বই থেকে আরও জানা যায়, ১৫ মার্চ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সঙ্গে তদানীন্তন পূর্ব বাংলার মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে ঐতিহাসিক আট দফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল যার মাধ্যমে সর্বপ্রথম বাংলাভাষা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। আর একটি প্রতিষ্ঠিত সরকার এ দেশবাসীর কাছে নতি স্বীকারে বাধ্য হয়েছিল। সেই চুক্তি স্বাক্ষরের আগে জেলখানায় আটক ভাষা আন্দোলনের কর্মীদের থেকে অনুমোদন নেওয়া হয়। কারাবন্দী অন্যদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুও চুক্তি অনুমোদন করেছিলেন। চুক্তির শর্ত মোতাবেক বঙ্গবন্ধুসহ অন্য ভাষাসৈনিকরা কারামুক্ত হয়েছিলেন। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক সাধারণ ছাত্রসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন সদ্য কারামুক্ত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ১৭ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের আহ্বানে অনুষ্ঠিত সভায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, নঈমুদ্দিন আহমদ, শওকত আলী, আবদুল মতিন, শামসুল হক প্রমুখ যুবনেতার কঠোর সাধনার ফলে বাংলাভাষার আন্দোলন সমগ্র পূর্ব বাংলায় একটি গণআন্দোলন হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছিল। জনসভা, মিছিল আর স্লোগানে সমগ্র বাংলাদেশ কেঁপে উঠেছিল। রাস্তায়, দেয়ালে-দেয়ালে পোস্টার— ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। দাবি আদায়ের জন্য ভাষা সংগ্রাম কমিটি অক্লান্তভাবে কাজ করে যেতে লাগল। এই ভাষা সংগ্রাম কমিটির অন্যতম ছাত্রনেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দর্পভরে যখন বললেন, ‘একমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ তখন বঙ্গবন্ধু সবার আগে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, ‘না বাংলাকেই রাষ্ট্রভাষা করতে হবে।’ ২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে জিন্নাহ আবারও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বললে বঙ্গবন্ধুসহ অন্য নেতৃবৃন্দের কণ্ঠে ‘না, না’ ধ্বনিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ক্রমবর্ধমানভাবে ভাষা আন্দোলন ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে পাকিস্তান সরকার তাকে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর কারারুদ্ধ করে। এরপরের বছর তাকে আরও দুবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি মোটেও দমে যাননি। তাই তার সাহস, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় শঙ্কিত হয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাকে ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি গ্রেফতার করে দুই বছর এক মাস সাতাশ দিন কারাবন্দী করে রেখেছিল। ভাষাসৈনিক গাজীউল হক তার বইতে লিখেছেন, কারাগারে থেকেই বঙ্গবন্ধু আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিতেন। ভাষাসৈনিক, প্রখ্যাত সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর একুশকে নিয়ে কিছু স্মৃতি, কিছু কথা প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, বঙ্গবন্ধু জেলে থেকেই ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত নেতাদের কাছে পরামর্শ ও নির্দেশনামূলক চিরকুট পাঠাতেন।

একুশে ফেব্রুয়ারির সেই মাহেন্দ্রক্ষণে বঙ্গবন্ধু সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না, কিন্তু তার নির্দেশনা ও পরামর্শ ভাষা সংগ্রামীদের উদীপ্ত করেছিল ১৪৪ ধারা ভেঙে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাজপথে নেমে আসতে। মায়ের ভাষার অমর্যাদা যাতে না হয়, সে জন্য রাজপথে নেমে এসেছিল ভাষাসংগ্রামী সর্বস্তরের মানুষ। কিন্তু লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর বুলেটের আঘাতে সালাম, রফিক, জব্বার, শফিক, বরকতসহ আরও অনেকের রক্তে রঞ্জিত হয়ে গিয়েছিল রাজপথ। তবু থেমে যায়নি বাঙালি। জহির রায়হানের কয়েকটি সংলাপ গল্পের কয়েকটি লাইনে সেই বিষয়টিই ফুটে ওঠে। তিনি লিখেছিলেন, আশ্চর্য! এ জন্য আমরা স্বাধীনতা চেয়েছিলাম! এ জন্য আমরা পাকিস্তান এনেছিলাম! এই সরকারকে আমরা মানি না। খুনে ডাকাতদের আমরা মানি না। পদত্যাগ চাই। বরকতের খুন আমরা ভুলব না। বিচার চাই। ফাঁসি চাই ওই খুনিদের। ভাইসব। সামনে এগিয়ে চলুন। ওদের গোলাগুলি আর বেয়নেটকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলুন। এভাবেই এগিয়ে গেছে ভাষা আন্দোলন। আলাউদ্দিন আল আজাদ তার স্মৃতিস্তম্ভ কবিতায় লিখেছেন, ‘ইটের মিনার ভেঙেছে ভাঙুক/একটি মিনার গড়েছি আমরা চার কোটি কারিগর/বেহালার সুরে রাঙা হূদয়ের বর্ণলেখায়। পলাশের আর/রামধনুকের গভীর চোখের তারায় তারায়/দ্বীপ হয়ে ভাসে যাদের জীবন/যুগে যুগে সেই শহীদের নাম/এঁকেছি প্রেমের ফেনিল শিখায়, তোমাদের নামে তাই আমাদের/হাজার মুঠির বজ্র শিখরে সূর্যের মতো জ্বলে শুধু এক শপথের ভাস্কর।

সে যা হোক, একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ছয় পরেই বঙ্গবন্ধু জেল থেকে মুক্তি পান। আর তারপর আবারও ঝাঁপিয়ে পড়েন ভাষার অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে। ওই বছরের ২৭ এপ্রিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা ও মহকুমা প্রতিনিধি সম্মেলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ১৯৫৩ সালে একুশের প্রথম বার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু একুশে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার আহ্বান জানান এবং অবিলম্বে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়েছিলেন। ১৯৫৬ সালের ১৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আইন পরিষদের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু সংসদের দৈনন্দিন কার্যসূচি বাংলাভাষায় মুদ্রণ করার দাবি জানান। আর ৭ ফেব্রুয়ারির পাকিস্তান গণপরিষদে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, রাষ্ট্রীয় ভাষার প্রশ্নে কোনো ধোঁকাবাজি করা যাবে না। পূর্ববঙ্গের জনগণের দাবি এই যে, বাংলা রাষ্ট্রীয় ভাষা হোক। অবশেষে পাকিস্তানের সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়, যা ছিল বাঙালির বিজয়, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির বিজয়। এই বিজয় অর্জনের পরই থেমে যাননি তিনি। এই ভাষার একনিষ্ঠ সেবক হিসেবে এর বিকাশ, সর্বস্তরে প্রচলনসহ মানোন্নয়নে কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। বাহাত্তরের সংবিধানে তিনি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করেন। এটাই ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রণীত সংবিধান। ১৯৭৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাভাষায় ভাষণ দিয়ে যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন, তা ইতিহাসের পাতায় চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সমুন্নত রেখে বাংলাভাষার মর্যাদাকে অক্ষুণ্ন রেখেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, পঁচাত্তরে জাতির পিতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ পাল্টে দিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রবর্তন করলেন। হঠাত্ করে যে মাথায় উদ্ভট পরিকল্পনার উদয় হয়েছিল তা কিন্তু নয়। সুচিন্তিতভাবে সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য সামনে রেখেই ওটা করেছিলেন। তাকে সমর্থন দিয়েছিল পূর্ব বাংলার ধর্মান্ধ জনগোষ্ঠী বিশেষ করে মুসলিম লীগ, জামায়াতসহ অন্যান্য প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি। জিয়াউর রহমান ভালো করেই জানতেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা যত দিন অক্ষুণ্ন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধুকে বাঙালির চেতনাপট থেকে মুছে ফেলা যাবে না।

কেননা বাঙালি জাতিসত্তার সঙ্গে মিশে গেছে বঙ্গবন্ধুর নাম। তাই বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ চালু করে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে অস্বীকৃতি জানিয়ে বাঙালি জাতিসত্তাকে দুর্বল করার প্রয়াস চালিয়েছিলেন। পাকিস্তানিরা বাঙালিদের পাকিস্তানিকরণের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়ার বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের নামে মূলত সে প্রক্রিয়াই শুরু হয়। স্বাধীন বাংলাদেশকে মন ও মননশীলতায় কতটা পাকিস্তানের কাছে নেওয়া যায় এটাই ছিল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের মূল লক্ষ্য।

পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রে যেসব ধর্মীয় উপাদান ঐতিহাসিক কারণে স্বাধীন বাংলাদেশে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, তিনি সেসব উপাদান বাংলাদেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি বাঙালি মানস থেকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত টলাতে পারেননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিতকে আরও মজবুত করেছেন। তার কারণে বাংলাভাষা পেয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি। সেই সঙ্গে উন্মোচিত হয়েছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ধর্মান্ধদের মুখোশ। বাংলার প্রতিটি মানুষ আজ হূদয় দিয়ে অনুভব করে বাঙালি জাতীয়তাবাদই আমাদের অস্তিত্বের স্মারক ও ধারক। আর সেই স্মারক ও ধারককে আরও শাণিত করে যাচ্ছে মহান একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা। এ জন্যই কবি মহাদেব সাহা তোমরা কি জানো কবিতায় বলেছেন, একুশের রাজপথজুড়ে এতো রঙিন আল্পনা আঁকা/তোমরা কি জানো সে তো নয় কোনো রঙ ও তুলির ব্যঞ্জনা কিছু/এই আলপনা, পথের শিল্প শহীদের তাজা রক্তের রঙ মাখা!

লেখক : সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

[email protected]

এই বিভাগের আরও খবর
বেড়েছে খেলাপি ঋণ
বেড়েছে খেলাপি ঋণ
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
মূল্যবান সময়ে দোয়া করুন
মূল্যবান সময়ে দোয়া করুন
বিপর্যস্ত পরিবেশ : উত্তরণের উপায়
বিপর্যস্ত পরিবেশ : উত্তরণের উপায়
দেশের উন্নয়নে চাই মালয়েশিয়া মডেল
দেশের উন্নয়নে চাই মালয়েশিয়া মডেল
নামেই জীবন নামেই মরণ
নামেই জীবন নামেই মরণ
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
কোরআনে বিজ্ঞান চর্চার তাগিদ
কোরআনে বিজ্ঞান চর্চার তাগিদ
জাতীয় বাজেট ও কৃষি খাত
জাতীয় বাজেট ও কৃষি খাত
লন্ডন বৈঠক : রাজনীতিতে সুবাতাস
লন্ডন বৈঠক : রাজনীতিতে সুবাতাস
কুশাসক-সুশাসক নির্ণয়ের দাঁড়িপাল্লা
কুশাসক-সুশাসক নির্ণয়ের দাঁড়িপাল্লা
সর্বশেষ খবর
বিদেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান তদারকিতে ১১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন
বিদেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান তদারকিতে ১১ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন

৮ মিনিট আগে | জাতীয়

লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আটকে পড়া ১৫৮ বাংলাদেশি
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন আটকে পড়া ১৫৮ বাংলাদেশি

৩০ মিনিট আগে | জাতীয়

দুপুরের মধ্যে ৮ জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস
দুপুরের মধ্যে ৮ জেলায় ঝড়বৃষ্টির আভাস

৩২ মিনিট আগে | জাতীয়

সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেলে তল্লাশির নেপথ্যে চাঁদাবাজি, সেই হান্নান গ্রেফতার
সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেলে তল্লাশির নেপথ্যে চাঁদাবাজি, সেই হান্নান গ্রেফতার

৩৫ মিনিট আগে | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী ধর্ষণ, এবার সেই হেলপার গ্রেফতার
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী ধর্ষণ, এবার সেই হেলপার গ্রেফতার

৪৩ মিনিট আগে | চায়ের দেশ

চীনা নাগরিকদের দ্রুত ইসরায়েল ছাড়ার নির্দেশ
চীনা নাগরিকদের দ্রুত ইসরায়েল ছাড়ার নির্দেশ

৪৭ মিনিট আগে | পূর্ব-পশ্চিম

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আজ আবারও বসছে ঐকমত্য কমিশন
রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আজ আবারও বসছে ঐকমত্য কমিশন

৪৯ মিনিট আগে | জাতীয়

চড়া সুদের মাশুল দিচ্ছে সরকার
চড়া সুদের মাশুল দিচ্ছে সরকার

১ ঘণ্টা আগে | অর্থনীতি

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ঈদুল আজহার প্রভাব
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ঈদুল আজহার প্রভাব

১ ঘণ্টা আগে | ইসলামী জীবন

একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১৭ জুন)
একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (১৭ জুন)

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

এআই জেনারেটেড ডিপফেক ভিডিও এড়িয়ে চলার অনুরোধ
এআই জেনারেটেড ডিপফেক ভিডিও এড়িয়ে চলার অনুরোধ

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

মানবিকতার চর্চার ঘাটতি অপরাধ বাড়ার অন্যতম কারণ
মানবিকতার চর্চার ঘাটতি অপরাধ বাড়ার অন্যতম কারণ

১ ঘণ্টা আগে | মুক্তমঞ্চ

দেড় হাজার হত্যা মামলা পাঁচ মাসে
দেড় হাজার হত্যা মামলা পাঁচ মাসে

১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ডেমরায় ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু
ডেমরায় ছাদ থেকে পড়ে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু

২ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প
জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে চাই না, তবে হামলার জবাব দেব: পেজেশকিয়ান
যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে চাই না, তবে হামলার জবাব দেব: পেজেশকিয়ান

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দুবাইয়ে সপ্তাহে চার দিনের অফিস !
দুবাইয়ে সপ্তাহে চার দিনের অফিস !

৪ ঘণ্টা আগে | পাঁচফোড়ন

ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান, চলবে ভোর পর্যন্ত
ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান, চলবে ভোর পর্যন্ত

৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েলের দুই টিভি চ্যানেলের অফিস খালি করার নির্দেশ ইরানের
ইসরায়েলের দুই টিভি চ্যানেলের অফিস খালি করার নির্দেশ ইরানের

৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

খামেনিকে হত্যা করতে পারে ইসরায়েল, ইঙ্গিত দিলেন নেতানিয়াহু
খামেনিকে হত্যা করতে পারে ইসরায়েল, ইঙ্গিত দিলেন নেতানিয়াহু

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ট্রাম্প যেন ইচ্ছা করলেই যুদ্ধে জড়াতে না পারেন — প্রস্তাব আনছেন মার্কিন সিনেটর
ট্রাম্প যেন ইচ্ছা করলেই যুদ্ধে জড়াতে না পারেন — প্রস্তাব আনছেন মার্কিন সিনেটর

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

তাবরিজে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিতের দাবি ইরানের
তাবরিজে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিতের দাবি ইরানের

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ফের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব ছাড়ার হুঁশিয়ারি
ফের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব ছাড়ার হুঁশিয়ারি

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ইসরায়েলের হামলা
তেহরানে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ইসরায়েলের হামলা

১০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

পৃথিবীতে প্রাণের উৎস কী সত্যিই এসেছে এই অঞ্চল থেকে?
পৃথিবীতে প্রাণের উৎস কী সত্যিই এসেছে এই অঞ্চল থেকে?

১০ ঘণ্টা আগে | বিজ্ঞান

নন্দনগাছীতে দুই মিনিট থামবে ঈশ্বরদী কমিউটার ট্রেন
নন্দনগাছীতে দুই মিনিট থামবে ঈশ্বরদী কমিউটার ট্রেন

১১ ঘণ্টা আগে | নগর জীবন

পার্বতীপুরে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে তরুণের মৃত্যু
পার্বতীপুরে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে তরুণের মৃত্যু

১১ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
সেনাপ্রধানের সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

১২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ
বিতর্কিত তিন জাতীয় নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ

১২ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

নাসিরনগরে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
নাসিরনগরে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

১২ ঘণ্টা আগে | দেশগ্রাম

সর্বাধিক পঠিত
সত্যিই কি ইরান-তুরস্ক-সৌদি-পাকিস্তান মিলে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন করবে?
সত্যিই কি ইরান-তুরস্ক-সৌদি-পাকিস্তান মিলে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন করবে?

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানে মোসাদ গুপ্তচরের ফাঁসি কার্যকর
ইরানে মোসাদ গুপ্তচরের ফাঁসি কার্যকর

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্রের খোঁজে বিশ্ব, গোপন আস্তানা নিয়ে প্রশ্ন
ইরানের পারমাণবিক অস্ত্রের খোঁজে বিশ্ব, গোপন আস্তানা নিয়ে প্রশ্ন

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করলো পাকিস্তান
ইরানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করলো পাকিস্তান

১৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প
জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করতে বললেন ট্রাম্প

৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

সংঘাতের চতুর্থ দিনে ইসরায়েলে ইরানের সবচেয়ে বড় হামলা
সংঘাতের চতুর্থ দিনে ইসরায়েলে ইরানের সবচেয়ে বড় হামলা

১৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের ৩৭০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
ইরানের ৩৭০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা: ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি : আসিফ মাহমুদ
শপথের সুযোগ নেই, পরিপক্ব আচরণ প্রত্যাশা করি : আসিফ মাহমুদ

১৩ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে আইএইএ
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে আইএইএ

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েলের ওপর ফের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বহু হতাহত
ইসরায়েলের ওপর ফের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, বহু হতাহত

২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মার্কিন দূতাবাসে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
মার্কিন দূতাবাসে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারের 'এক তৃতীয়াংশ' ধ্বংসের দাবি ইসরায়েলের
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারের 'এক তৃতীয়াংশ' ধ্বংসের দাবি ইসরায়েলের

১৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ফের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব ছাড়ার হুঁশিয়ারি
ফের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, তেল আবিব ছাড়ার হুঁশিয়ারি

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান, চলবে ভোর পর্যন্ত
ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান, চলবে ভোর পর্যন্ত

৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

তাবরিজে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিতের দাবি ইরানের
তাবরিজে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিতের দাবি ইরানের

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েল থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিতে যাচ্ছে পোল্যান্ড
ইসরায়েল থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নিতে যাচ্ছে পোল্যান্ড

১৫ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

দুই হাজার কোটি টাকা পাচার : দুদকের জালে সাবেক হাইকমিশনার মুনা
দুই হাজার কোটি টাকা পাচার : দুদকের জালে সাবেক হাইকমিশনার মুনা

১৭ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

‘শখ করে শিশুদের হত্যা করছে ইসরায়েল’
‘শখ করে শিশুদের হত্যা করছে ইসরায়েল’

২০ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

তেহরান থেকে আরও দুই মোসাদ এজেন্ট গ্রেফতার
তেহরান থেকে আরও দুই মোসাদ এজেন্ট গ্রেফতার

২২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ট্রাম্প যেন ইচ্ছা করলেই যুদ্ধে জড়াতে না পারেন — প্রস্তাব আনছেন মার্কিন সিনেটর
ট্রাম্প যেন ইচ্ছা করলেই যুদ্ধে জড়াতে না পারেন — প্রস্তাব আনছেন মার্কিন সিনেটর

৯ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

খামেনিকে হত্যা করতে পারে ইসরায়েল, ইঙ্গিত দিলেন নেতানিয়াহু
খামেনিকে হত্যা করতে পারে ইসরায়েল, ইঙ্গিত দিলেন নেতানিয়াহু

৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েলের হামলায় আতঙ্কিত তেহরান, রাজধানী ছাড়ছেন বাসিন্দারা
ইসরায়েলের হামলায় আতঙ্কিত তেহরান, রাজধানী ছাড়ছেন বাসিন্দারা

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

নেতানিয়াহুর ওপর আস্থা হারাচ্ছে ইসরায়েলিরা
নেতানিয়াহুর ওপর আস্থা হারাচ্ছে ইসরায়েলিরা

২১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ভারতে সৌদি হজ ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা
ভারতে সৌদি হজ ফ্লাইটে যান্ত্রিক ত্রুটি, বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

২২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

আলোচনা অব্যাহত রাখতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানাতে হবে: ইরান
আলোচনা অব্যাহত রাখতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানাতে হবে: ইরান

১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে চাই না, তবে হামলার জবাব দেব: পেজেশকিয়ান
যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে চাই না, তবে হামলার জবাব দেব: পেজেশকিয়ান

৪ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইসরায়েলের দুই টিভি চ্যানেলের অফিস খালি করার নির্দেশ ইরানের
ইসরায়েলের দুই টিভি চ্যানেলের অফিস খালি করার নির্দেশ ইরানের

৬ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

এমপিওভুক্ত এক লাখ পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
এমপিওভুক্ত এক লাখ পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

১৫ ঘণ্টা আগে | জাতীয়

ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে চায় ভারত
ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে দুই পক্ষের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে চায় ভারত

১৮ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত পুতিন-এরদোয়ান
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত পুতিন-এরদোয়ান

১৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

প্রিন্ট সর্বাধিক
সর্বাত্মক যুদ্ধের আভাস
সর্বাত্মক যুদ্ধের আভাস

প্রথম পৃষ্ঠা

রাজনৈতিক দলগুলো আট বিষয়ে একমত
রাজনৈতিক দলগুলো আট বিষয়ে একমত

প্রথম পৃষ্ঠা

বিমা খাতে আসছে নতুন আইন
বিমা খাতে আসছে নতুন আইন

শিল্প বাণিজ্য

দলগুলোতে নির্বাচনি তৎপরতা
দলগুলোতে নির্বাচনি তৎপরতা

প্রথম পৃষ্ঠা

সোনিয়া গান্ধী অসুস্থ
সোনিয়া গান্ধী অসুস্থ

প্রথম পৃষ্ঠা

আজকের ভাগ্যচক্র
আজকের ভাগ্যচক্র

আজকের রাশি

স্বরূপে ফিরছে সেই জমিদারবাড়ি
স্বরূপে ফিরছে সেই জমিদারবাড়ি

পেছনের পৃষ্ঠা

মৃত্যুর মহাসড়ক চট্টগ্রাম-কক্সবাজার
মৃত্যুর মহাসড়ক চট্টগ্রাম-কক্সবাজার

পেছনের পৃষ্ঠা

সপ্তমবারের মতো ভাঙছে এরশাদের জাতীয় পার্টি
সপ্তমবারের মতো ভাঙছে এরশাদের জাতীয় পার্টি

প্রথম পৃষ্ঠা

নামেই জীবন নামেই মরণ
নামেই জীবন নামেই মরণ

সম্পাদকীয়

চরে কৃষিবিপ্লবের হাতছানি
চরে কৃষিবিপ্লবের হাতছানি

পেছনের পৃষ্ঠা

ব্র্যান্ড দূষণ বাড়াচ্ছে ৪০ শতাংশ ফ্যাশন
ব্র্যান্ড দূষণ বাড়াচ্ছে ৪০ শতাংশ ফ্যাশন

শিল্প বাণিজ্য

নিষেধাজ্ঞা শেষ, মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মাছ
নিষেধাজ্ঞা শেষ, মিলছে না কাঙ্ক্ষিত মাছ

খবর

ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরছে গভর্নরের দক্ষ ব্যবস্থাপনায়
ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরছে গভর্নরের দক্ষ ব্যবস্থাপনায়

প্রথম পৃষ্ঠা

দল নিষিদ্ধের আইনে উদ্বেগ জাতিসংঘের
দল নিষিদ্ধের আইনে উদ্বেগ জাতিসংঘের

প্রথম পৃষ্ঠা

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে অগ্রগতি
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে অগ্রগতি

শিল্প বাণিজ্য

পোশাকশিল্পের নতুন চ্যালেঞ্জ যুদ্ধ
পোশাকশিল্পের নতুন চ্যালেঞ্জ যুদ্ধ

প্রথম পৃষ্ঠা

নিবন্ধন পেতে চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে এনসিপি
নিবন্ধন পেতে চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে এনসিপি

নগর জীবন

লন্ডন বৈঠকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথযাত্রা
লন্ডন বৈঠকে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথযাত্রা

প্রথম পৃষ্ঠা

ভোট কেন্দ্র সংস্কারে ইসির নির্দেশনা
ভোট কেন্দ্র সংস্কারে ইসির নির্দেশনা

পেছনের পৃষ্ঠা

সচিবালয়ে ফের বিক্ষোভ
সচিবালয়ে ফের বিক্ষোভ

প্রথম পৃষ্ঠা

নতুন কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান জনগণ চায় না
নতুন কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান জনগণ চায় না

নগর জীবন

গণতন্ত্র ফেরাতে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি
গণতন্ত্র ফেরাতে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি

প্রথম পৃষ্ঠা

হবিগঞ্জে চলন্ত বাসে ধর্ষণের স্বীকার কলেজছাত্রী
হবিগঞ্জে চলন্ত বাসে ধর্ষণের স্বীকার কলেজছাত্রী

পেছনের পৃষ্ঠা

বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু আজ
বাংলাদেশের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু আজ

প্রথম পৃষ্ঠা

বৈঠকের সিদ্ধান্ত ইসিকে দ্রুত জানান
বৈঠকের সিদ্ধান্ত ইসিকে দ্রুত জানান

প্রথম পৃষ্ঠা

শেষ বিদায়ে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন মোস্তফা মহসিন মন্টু
শেষ বিদায়ে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধায় সিক্ত হলেন মোস্তফা মহসিন মন্টু

নগর জীবন

গণমাধ্যম এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়
গণমাধ্যম এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত নয়

প্রথম পৃষ্ঠা

সাবেক হাইকমিশনার মুনার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান
সাবেক হাইকমিশনার মুনার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান

পেছনের পৃষ্ঠা

সহসাই থামছে না ইরান ইসরায়েল সংঘাত
সহসাই থামছে না ইরান ইসরায়েল সংঘাত

পূর্ব-পশ্চিম