মঙ্গলবার, ১০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মাহমুদের ক্ষমতা লাভ

১৭৫৪ খ্রিস্টাব্দে সুলতান প্রথম মাহমুদের মৃত্যুর পর তার ভাই তৃতীয় ওসমান ক্ষমতা লাভ করেন। তিনি মাত্র তিন বছর রাজত্ব করেন। তিনি কুঁজো ছিলেন। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু হলে তার ভাই তৃতীয় মোস্তফা সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার আমলে রাশিয়ার জারিনা ক্যাথারিন তুরস্ক আক্রমণ করেন। রাশিয়া প্রশিয়া ও অস্ট্রিয়ার সঙ্গে একটি গোপন চুক্তি করে তুরস্কের বিরুদ্ধে আগ্রাসন নীতি চরিতার্থ করার প্রয়াস পায়। বেলগ্রেড চুক্তি লঙ্ঘন করে রাশিয়া পোল্যান্ড আক্রমণ করলে তুরস্ক ১৭৬৮ সালে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। উভয় পক্ষে বহুদিন সংঘর্ষ চলে; কিন্তু কোনো দিকেই জয়-পরাজয় নিশ্চিত হয়নি। জলে ও স্থলে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকে ১৭৭৪ সাল পর্যন্ত। অবশেষে কুচুক কাইনারজির সন্ধি অনুযায়ী যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। এ সন্ধির শর্তানুযায়ী রাশিয়া ক্রিমিয়া, মলদাভিয়া, ওয়ালাচিয়া ও বেসারাবিয়া তুরস্ককে ছেড়ে দেয়।

তাতারদের স্বাধিকার মেনে নেওয়া হয়। রাশিয়া কের্চ, ইয়েনিকেল, আজফ ও কিনবান অধিকার করে। এর ফলে পরবর্তীকালে ক্রিমিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার পক্ষে তুরস্কের বিরুদ্ধে আগ্রাসন নীতি পরিচালনা করা সম্ভবপর হয়। এ সন্ধি মোতাবেক তুরস্কের খ্রিস্টান (গ্রিক চার্চ) প্রজাদের ওপর রাশিয়ার নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব অর্পিত হয় রাশিয়ার ওপর। কৃষ্ণসাগর ও ভূমধ্যসাগরে রুশ জাহাজ চলাচলের অনুমতি লাভ করে কিন্তু দার্দানেলিস এবং বসফরাসে রুশ নৌবহরের তৎপরতা সম্বন্ধে কোনো উল্লেখ এই সন্ধিতে দেখা যায় না। এ চুক্তিতে পোল্যান্ডের ভাগ্য সম্বন্ধে কিছু নির্ধারিত হয়নি। অটোমান তুরস্ককে তিন বছরে ৪০ লাখ রুবল প্রদান করার শর্ত আরোপিত হয়। এভারসলে যথার্থই বলেন, ‘কুচুক কাইনারজির সন্ধি বিভিন্ন শর্তের দিক থেকে বিচার করার পরিণতি হলেও ইতিহাসবিদদের দ্বারা স্বীকৃত হয়েছে যে, এটা তুরস্ক সাম্রাজ্যের অধিকতর অধঃপতনের সূচনা করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর