পিতার মৃত্যুকালে আকবর পাঞ্জাবের কালানুর শহরে অবস্থান করছিলেন; তার পিতৃবন্ধু খান-ই-খানান বৈরাম খান ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাকে সিংহাসনে আরোহণ করতে সহায়তা করেন। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। সেজন্য বৈরাম খান তার প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। আকবরের সিংহাসনারোহণের সময় ভারতের অবস্থা : আকবর যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন (১৫৫৬ সালে) ভারতবর্ষের রাজনৈতিক অবস্থা তখন জটিল ও তমসাচ্ছন্ন ছিল। হুমায়ুন তার মৃত্যুর আগে কেবল পাঞ্জাব, দিল্লি ও আগ্রা উদ্ধার করতে পেরেছিলেন। সাম্রাজ্যকে তিনি সুসংহত ও সুদৃঢ় করে যাওয়ার সুযোগ ও সময় পাননি। কাজেই সিংহাসনে আরোহণ করে আকবর চারদিকে বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখতে পেলেন। দিল্লি, আগ্রাসহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের দুর্ভিক্ষ ও মড়কের ফলে বহু লোকের প্রাণহানি ঘটে। এতে সাম্রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা বিপন্ন হয়। এ সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও আকবরের বিরুদ্ধে ছিল। প্রথমত, সিকানদার শূর ও ইবরাহিম শূর আকবরের সিংহাসন লাভের বিরোধিতা করেছিলেন। সিকানদার শূর পাঞ্জাবে বিশেষ শক্তি সঞ্চয় করে মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মতলব এঁটেছিলেন। ইবরাহিম শূর সাম্রাজ্যের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। শেরশাহ শূরের ভ্রাতুষ্পুত্র আদিল শাহ শূরও সিংহাসনের দাবিদার ছিলেন। উপরোক্ত দুজন প্রতিদ্বন্দ্ব^ী অপেক্ষা তিনি অধিক শক্তিশালী ছিলেন। আদিল শাহের সেনাপতি হিমু যুদ্ধবিদ্যায় সুদক্ষ ছিলেন। আদিল শাহ আকবরের সিংহাসনারোহণকালে আগ্রার উপকণ্ঠ থেকে মালব দেশ ও জৌনপুর পর্যন্ত তার রাজ্য বিস্তৃত করেন। দ্বিতীয়ত, আকবরের ভাই মুহাম্মদ হাকিমের অধীনে কাবুল, বঙ্গদেশ, মালব, গুজরাট, গণ্ডোয়ানা, উড়িষ্যা, কাশ্মীর, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও দাক্ষিণাত্য তখন স্বাধীন হয়ে পড়েছিল। তৃতীয়ত, রাজপুতরাও প্রথম মুঘল সম্রাটের আঘাত সামলে ক্রমে শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। চতুর্থত, পশ্চিম উপকূলে পর্তুগিজরা নিজেদের প্রাধান্য বিস্তারে ব্যস্ত ছিল। আরব সাগর ও পারস্য উপসাগরে তাদের প্রভুত্বের ফলে মক্কাগামী তীর্থযাত্রীদের ভীষণ অসুবিধা ও বিপদের সৃষ্টি হয়েছিল। সাম্রাজ্যের এক দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আকবর সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। এ সময়ে বয়স ও অভিজ্ঞতায় আকবর ছিলেন একেবারেই অপরিণত। কিন্তু তার সৌভাগ্য যে, রাজকার্য পরিচালনার জন্য তিনি বৈরাম খানের মতো একজন যোগ্য, বিচক্ষণ ও শক্তিমান অভিভাবক লাভ করেছিলেন। সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সবাই যখন আকবরকে হিন্দুস্থান ত্যাগের পরামর্শ দেন তখন একমাত্র বৈরাম খানই তাকে সংকট ও দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সাহস জুগিয়েছেন। সিংহাসনারোহণের অব্যবহিত পরই আকবরকে আদিল শাহের প্রধান সেনাপতি হিমুর প্রচ- আক্রমণের মোকাবিলা করতে হয়। বৈরাম খানের সহায়তায় অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে আকবর এ দুর্যোগ অতিক্রম করেন।
শিরোনাম
- আমরা কোন রাজনীতির কথা ভাবছি
- রাজধানীতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন, পুড়ল দোকান
- ঢাকায় ভূমিকম্পে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সমবেদনা
- ভূমিকম্পে ঢাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের তালিকা প্রকাশ
- নারায়ণগঞ্জ জেলায় ভূমিকম্পে শিশুর মৃত্যু, আহত ২৪
- যাত্রাবাড়ীতে নবীউল্লাহ নবীর গণসংযোগ
- রাজধানীতে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি
- ‘তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হাসিনার বিচার হয়েছে, তবে আপিলের সুযোগ আছে’
- পোস্টাল ভোটিং: দুই দিনে সাড়ে ৬ হাজার নিবন্ধন
- একসঙ্গে সহকারী অধ্যাপক হলেন ১৮৭০ শিক্ষক
- হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা
- ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী জেলায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
- রাজশাহীতে বদ্ধ ঘর থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- ‘ঢাকার পুরনো ভবনগুলোর ৯০ শতাংশ বিল্ডিং কোড না মেনে নির্মিত’
- ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০
- ধানের শীষে দেশের মানুষের আস্থা রয়েছে: দুলু
- ডেঙ্গুতে মৃত্যুহীন দিনে হাসপাতালে আরও ৪৩৬ জন
- যেভাবে স্মার্টফোনেই মিলবে ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা
- এমন ভূমিকম্প আগে কখনও অনুভব করিনি : ফারুকী
- ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশনা
ইতিহাস
আকবরের সিংহাসনারোহণ
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর