বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ধর্ষিতাকে হেনস্তা

অভিযোগটি খতিয়ে দেখুন

দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন পুলিশের কর্তব্য বলেই বিবেচিত হওয়া উচিতÑ এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণের অবকাশ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি পুলিশের কিছু সদস্যের নেতিবাচক অবস্থান এ বাহিনীর ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। যেমনটি ঘটেছে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করতে গেলে অভিযোগকারীদের হেনস্তা করার ঘটনায়। কালকিনির ওই কিশোরীকে রবিবার রাতে বাড়ি থেকে ডেকে পাশের পাট খেতে নিয়ে ধর্ষণ করে একই এলাকার ওয়ারেশ খানের ছেলে রাজীব খান। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে রাজীবকে আটকে রেখে খাসেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে খবর দিলে এসআই বেল্লালসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য এসে উল্টো কিশোরী ও তার স্বজনদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। অভিযুক্ত রাজীবকে উদ্ধার করে পুলিশ নিয়ে গেলেও পরে ছেড়ে দেয়। এ ঘটনায় সোমবার থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে মীমাংসার কথা বলে দিনভর বসিয়ে রাখে। রাতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে মামলা নেয় কালকিনি থানা। ভিকটিম কিশোরীর অভিযোগ, পুলিশ তাকে চড়-থাপ্পড় মেরেছে। তার আত্মীয়স্বজনকেও মারধর করেছে। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা অবশ্য অভিযোগকারী এবং তার আত্মীয়স্বজনের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে কার বক্তব্য সঠিক তা যথাযথ তদন্তেই উদ্ঘাটন হতে পারে। তবে খাসেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের অবস্থান যে খুব একটা স্বচ্ছ নয়, মামলা নেওয়ার ব্যাপারে অনীহা এবং রাতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে মামলা নেওয়া তারই প্রমাণ। ধর্ষণ-জাতীয় গুরুতর অপরাধের মামলা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে নতুন নয়। ফেনীর চাঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যার দিকে তাকালেও সে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ক্ষমতাধর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে গিয়ে নুসরাত হেনস্তার শিকার হয়েছিলেন সোনাগাজী থানায়। গুটিকয় অসৎ সদস্যের জন্য পুলিশের ভাবমূর্তি কতটা বিপন্ন হয়ে পড়ছে এটি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমরা আশা করব কালকিনিতে পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। ব্যক্তির অসংগত আচরণের দায় যাতে পুলিশের ওপর না  চাপে সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন ব্রতকে যারা পদদলিত করে পুলিশের ভাবমূর্তির সংকট সৃষ্টি করছে তাদের সামাল দেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর