বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

হজের পটভূমি

মুফতি ওলিউল্লাহ পাটোয়ারী

হজের পটভূমি

হজ ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির অন্যতম। হজের আভিধানিক অর্থ সংকল্প করা, পারিভাষিক অর্থে হজের মাসে নির্ধারিত দিনসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বায়তুল্লাহ ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ জিয়ারত ও বিশেষ কার্যাদি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে সম্পাদন করাকে হজ বলা হয়। হজের রয়েছে সুপ্রাচীন ইতিহাস ও দীর্ঘ পটভূমি। এর প্রতিটি কাজ ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ও তাৎপর্যপূর্ণ। জান্নাত থেকে পৃথিবীতে আসার পর হজরত আদম ও হাওয়া (আ.) পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। অত্যন্ত ব্যাকুল হয়ে তাঁরা একে অন্যকে খুঁজতে থাকেন। অবশেষে আল্লাহর রহমতে তাঁরা আরাফাতের ময়দানে পরস্পর মিলিত হন। তারই  কৃতজ্ঞতাস্বরূপ আদমসন্তানরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতি বছর আরাফাতের মহামিলন প্রান্তরে সমবেত হয়ে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করেন। তারা তাদের হৃদয়-মন দিয়ে আল্লাহকে উপলব্ধি করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। এভাবে সাফা -মারওয়ার মধ্যে সায়ি, মীনায় শয়তানকে কঙ্কর মারা এবং কোরবানির প্রেক্ষাপট যা হজরত ইবরাহিম (আ.) ও বিবি হাজেরা এবং তাদের পুণ্যবান সন্তান হজরত ইসমাইল (আ.)-এর দ্বারা রচিত হয়েছে আজ থেকে প্রায় ৪ হাজার বছর আগে। এভাবে হজরত আদম (আ.) থেকে আজ পর্যন্ত আল্লাহতে নিবেদিতপ্রাণ নবী-রসুল তথা আল্লাহর নেককার সত্যপ্রাণ ও মকবুল বান্দাদের পরম ব্যাকুলতার সঙ্গে আল্লাহর ঘর তাওয়াফের মাধ্যমে হাজার বছরের আত্মনিবেদনে রচিত হয়েছে হজ ও জিয়ারতের সুবিশাল প্রেক্ষাপট। সর্বপ্রথম হজরত আদম (আ.) বায়তুল্লাহয় হজ আদায় করেন। এরপর হজরত নুহ (আ.)সহ অন্য নবী-রসুলরা বায়তুল্লাহ জিয়ারত ও তাওয়াফ করেছেন। হাদিসে বর্ণিত আছে বায়তুল্লাহর পুনর্নির্মাণের কাজ সমাধা করার পর হজরত জিবরাইল (আ.) ইবরাহিম (আ.)-কে এই পবিত্র ঘর তাওয়াফ ও হজ করার জন্য বললেন। এ নির্দেশ পেয়ে হজরত ইবরাহিম ও ইসমাইল (আ.) কাবাঘর প্রদক্ষিণসহ হজের যাবতীয় কর্মকা- সমাধা করেন। এরপর আল্লাহতায়ালা হুকুম করলেন, ‘হে ইবরাহিম! তুমি গোটা পৃথিবীর মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা ছড়িয়ে দাও।’ কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কাছে হজের ঘোষণা করে দাও তারা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উষ্ট্রের পিঠে তারা আসবে দূরদূরান্তের পথ অতিক্রম করে।’ সূরা হজ, আয়াত ২৭। তখন হজরত ইবরাহিম (আ.) একটি উঁচু স্থানে আরোহণ করলেন এবং ডানে বাঁয়ে পূর্ব-পশ্চিমে ফিরে হজের ঘোষণা করলেন।

লেখক : খতিব, বায়তুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দক্ষিণ পীরের বাগ, অলি মার্কেট, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর