শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা

অপ্রত্যাশিত অবস্থার অবসান হোক

দেশের পাঁচটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাজ করছে অচলাবস্থা নামের ভূতের আসর। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আন্দোলনে পড়াশোনা স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ বুয়েট শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার পরও সমস্যার জট খোলেনি আস্থার সংকটের কারণে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট আরও জোরদার হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে হার্ডলাইন অনুসরণের সিদ্ধান্তে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের চার্জশিট প্রস্তুত হয়েছে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। এক মাসেরও কম সময়ে মামলার তদন্ত শেষ করেছেন পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে এখনো থমকে আছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম। চলমান সেমিস্টারের ক্লাস শেষে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীরা তা থেকে বিরত রয়েছেন। আবরার হত্যাকান্ডের পর ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবি মেনে নিলেও তারা এখন তিনটি ইস্যু সামনে রেখে পরীক্ষা থেকে বিরত রয়েছেন, আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু করা, সম্প্রতি দুটি হলে সংঘটিত র‌্যাগের ঘটনায় জড়িতদের প্রাতিষ্ঠানিক শাস্তি নিশ্চিত ও বুয়েটে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির বিধান প্রণয়ন। পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দুই হলের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে কুয়েট। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি এ ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে বেতন আদায় করা হয় তা দিয়ে বড়জোর ক্যাম্পাসের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব। কিন্তু সংকট বেঁধেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতির কুশীলবদের কারণে। তাদের ভাগ্য গড়ার হিসাব-নিকাশের কারণে। এ সংকট উত্তরণে উপাচার্য পদে সত্যিকারের যোগ্যদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকরা শিক্ষার বদলে মোসাহেবিতে ব্যস্ত থাকবেন- এই নোংরা সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে। ছাত্র সংগঠনের নামে কেউ যাতে পেশাদার দুর্বৃত্তদের সংগঠন গড়ে তুলতে না পারে, সে নিশ্চয়তাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর