শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জাপানের শ্রমবাজার

সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

একে একে নিভেছে দেউটি। এটি শুধু অমিত্রাক্ষর ছন্দের জাদুকর কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবিতার পঙ্ক্তি নয়, বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন বাস্তবতা। অঙ্কের হিসাবে দেশের রেমিট্যান্স আয় ক্রমে বাড়ছে। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মজীবীর সংখ্যাও বাড়ছে বৈ কমছে না। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, জনশক্তি রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার হ্রাস পেয়েছে। মন্দার কারণে কোনো কোনো দেশ তাদের জনশক্তি বাজারের দ্বার বন্ধ করে দিয়েছে। এ অবস্থায় সুখবর দিয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশ জাপান। দুই দেশের সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী জাপান সরকার ১৫ ক্যাটাগরিতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে জনবল নেবে। এর আগে জাপান গমনেচ্ছুকে জাপানি ভাষা শেখার পাশাপাশি ১৫ ক্যাটাগরির মধ্যে যে কোনো একটিতে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। পরে জাপান সরকার পরীক্ষা নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করবে। সেই প্যানেল থেকে জাপানি কোম্পানিগুলো কর্মী বাছাই করে চাহিদাপত্র দাখিল করবে। পরে দুই দেশের সরকারের অনুমোদন নিয়ে ‘জিরো কস্ট মাইগ্রেশন’-এর মাধ্যমে জাপানে প্রেরণ করা হবে জনশক্তি। জাপান সরকার যে ১৫ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে জনবল নেবে তার মধ্যে রয়েছে- কেয়ার ওয়ার্কার, ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড ইনফরমেশন, কনস্ট্রাকশন, শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড শিপ মেশিনারি, অটোমোবাইল মেনটেইন্যান্স, এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি, বিল্ডিং ক্লিনিং ম্যানেজমেন্ট, ইন্ডাস্ট্রি মেশিনারি, অ্যাকোমোডেশন,

এগ্রিকালচার-ফিশারি অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার, ম্যানুফ্যাকচার অব ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ফুড সার্ভিস, ইলেকট্রিক্যাল, মেশিন পার্টস অ্যান্ড টোলিং এবং প্রিকাস্ট ম্যানুফ্যাকচারিং ওয়ার্কস।  জাপানে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের দুয়ার উন্মোচন নিঃসন্দেহে একটি সুখবর। জাপান যে ১৫টি ক্ষেত্রে লোক নেবে তাদের প্রশিক্ষিত কর্মী হতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য কিংবা মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীরা গড়ে যে মজুরি পান জাপানে পাবেন তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। জাপানে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না, প্রশিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন হবে। আমরা আশা করব, জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ যাতে সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়, সেজন্য সরকার সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেবে। জাপানের শ্রমবাজার টিকিয়ে রাখাকে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তারা দায়িত্ব হিসেবে নেবেন- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর