বৃহস্পতিবার, ৫ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

বড়পুকুরিয়ার কয়লা চুরি

অপরাধীদের শাস্তিবিধান করুন

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা চুরিকে পুকুরচুরির সঙ্গে তুলনা করেছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) গঠিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান ও গবেষণা কমিশন। কমিশন বলেছে, ওই কয়লাখনি থেকে দেড় লাখ নয়, সাড়ে ৫ লাখ টন কয়লা চুরি হয়েছে। এর আগে সরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কয়লা চুরি হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন। এ-সংক্রান্ত মামলা চলমান। তদন্তে কমিশন ২৭ ধরনের অসংগতি পেয়েছে। এটিকে রীতিমতো পুকুরচুরি বলে অভিহিত করে এর সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে দেড় শতাংশ বা ১ লাখ ৬১ হাজার টন প্রথাগত সিস্টেম লস ধরে অন্তত ৫ লাখ ৪৮ হাজার টন কয়লা চুরি হয়েছে বলে জানানো হয়। আর বিসিএমসিএল ও পেট্রোবাংলার দাবি খোয়া যাওয়া ১ লাখ ৪৪ হাজার কয়লা প্রথাগত লোকসান। ক্যাবের কমিশনের মতে, বেশি করে প্রথাগত লোকসান ধরার পরও চুরি যাওয়া কয়লার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন। তদন্ত প্রতিবেদনে চীনা কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কয়লা কেনার চুক্তিতে অসংগতি, কোল ইয়ার্ডে কয়লা না থাকা সত্ত্বেও কয়লা আছে বলে মিথ্যা তথ্য দেওয়া, অনধিক ১০ শতাংশ ময়েশ্চারে কয়লা সরবরাহ করার পরিবর্তে গড়ে ১৫ শতাংশের বেশি ময়েশ্চার দেখিয়ে বিক্রি ও এখতিয়ারবিহীন সুপারিশের ভিত্তিতে ইস্যুকৃত ডিওর মাধ্যমে খনি এলাকায় কালোবাজার তৈরিসহ মোট ২৭ ধরনের অনিয়ম ও অসংগতি তুলে ধরা হয়। এসব অনিয়মের বিচার ও বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডকে (বিসিএমসিএল) দুর্নীতিমুক্ত করতে ১৩টি সুপারিশও দিয়েছে কমিশন। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি একটি জাতীয় সম্পদ। দেশ ও জাতির কল্যাণে এ সম্পদ ব্যবহার হবেÑ এমনটিই প্রত্যাশা করা হয়। কিন্তু তার বদলে বেপরোয়া চৌর্যবৃত্তির শিকার হয়েছে এ কয়লাখনির কয়লা। গুটিকয় অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে প্রতিষ্ঠানটির সুনামও জিম্মি হয়ে পড়েছে। আমরা আশা করব, সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ক্যাবের প্রতিবেদনটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেবে। কয়লাখনির দুর্নীতির সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে- এমনটিও প্রত্যাশিত। বিসিএমসিএলকে দুর্নীতিমুক্ত করাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেও নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর