শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ডাকাতিয়ায় ডাকাতি

জনপ্রতিনিধিরা এগিয়ে আসুন

ডাকাতদের কবলে পড়েছে ডাকাতিয়া। ডাকাতিয়া একটি নদীর নাম। কুমিল্লার লাকসাম, মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এ নদী দখল ও দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। শুষ্ক মৌসুমে ডাকাতিয়া প্রায় শুকিয়ে যায়। নদীতে তখন থাকে হাঁটুপানি। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট্ট নদীর মতো অবস্থাই দাঁড়ায় তার। বৈশাখে যার হাঁটুজল থাকে। ডাকাতিয়া নদীতে এ চৈত্র শেষে সে অবস্থা দাঁড়িয়েছে। ডাকাতিয়া নদী কুমিল্লার ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ। বর্ষায় নদীর কলতানে মুখরিত হয় পুরো এলাকা। ইরি-বোরো মৌসুমে নদীর দুই পাড়ের হাজার হাজার কৃষকের একমাত্র ভরসা ডাকাতিয়া। এ নদীতে দখল-দূষণের পাশাপাশি ফিল্মিস্টাইলে মাটি ডাকাতি চলছে। বর্ষায় প্রবল স্রোত থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে বুকে পলি জমে পানিশূন্য হয়ে পড়ে নদী। ডাকাতিয়ার পানি কমতে থাকার সুযোগে বিভিন্ন স্থানে অসাধু চক্র কোনো অনুমতি ছাড়াই ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে। এ-সংক্রান্ত সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসন তৎক্ষণাৎ অ্যাকশনে গেলেও তারা সরে যাওয়ার পর পুনরায় মাটি ডাকাতির হিড়িক পড়ে যায়। চলতি শুষ্ক মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে ডাকাতিয়া প্রায় শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর দুই পাড়ে নজর পড়েছে মাটি ডাকাতদের। লাকসাম পৌরশহরের বাতাখালী, কলেজ রোড, উত্তর বাজার, পেয়ারাপুর, উপজেলার চুনাতি, সাতবাড়িয়া, ইছাপুরা, সিংজোড়, হামিরাবাগ, কালিয়াপুর এবং মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোটে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালী মহল। শুধু ডাকাতিয়া নয়, দেশের সব নদ-নদীই লুটেরা ও ডাকাতদের অসহায় শিকার। তারা নদ-নদীর যেখান-সেখান থেকে বালু তুলে ভারসাম্য নষ্ট করছে। নদ-নদীর পাড় কেটে মাটি ডাকাতি করে নিয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লার তিন উপজেলার ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ ডাকাতিয়া নদী। এলাকার চাষাবাদ যেমন এ নদীর ওপর নির্ভরশীল তেমন পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে রয়েছে সম্পর্ক। ডাকাতিয়া নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসা উচিত। সমন্বিত সামাজিক উদ্যোগ নিয়ে নদী খননের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। নদী থেকে যে মাটি পাওয়া যাবে তা বিক্রি করে উঠতে পারে খরচের টাকা। নদীর গভীরতা বাড়লে বছরজুড়ে পানির ধারণ ক্ষমতাও বাড়বে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর