রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

সত্য সুন্দর ও কল্যাণের দিশারি রসুলুল্লাহ

মুহম্মাদ আশরাফ আলী

সত্য সুন্দর ও কল্যাণের দিশারি হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শিষ্টাচার ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। তাঁর জীবন কাহিনির দিকে দৃষ্টিপাত করলে তাঁর শিষ্টাচারিতা, নম্রতা ভদ্রতার পরিচয় মেলে। তিনি ছিলেন অত্যন্ত নম্র ভদ্র বিনয়ী। তিনি কারও প্রতি কখনো কুবাক্য ব্যবহার করেননি। করেননি কখনো দুর্ব্যবহার। সর্বদা মানুষের সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ আচরণ করতেন। কারও সঙ্গে দেখা হলে সর্বপ্রথম তিনি সালাম দিতেন। কারও কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি কথা বলতেন না, এমনকি তিনি এতই বিনয়াবনত ছিলেন যে, সাহাবিদের তাঁকে দাঁড়িয়ে সম্মান দিতে নিষেধ করতেন। আল কোরআনে তাঁর নম্রতা সম্পর্কে ঘোষিত হয়েছে, ‘এ আল্লাহরই রহমত যে, আপনি যদি কর্কশভাষী ও পাষাণ হতেন, তাহলে এসব লোক আপনার চারপাশ থেকে সরে পড়ত।’

মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কারও কাছে অঙ্গীকার করলে তা পালনে সচেষ্ট থাকতেন। প্রতিজ্ঞা করলে ভঙ্গ করতেন না। অঙ্গীকার পালনে কঠোরতা অবলম্বন করায় এমনকি মক্কাবাসীও তাঁর কাছে আমানত গচ্ছিত রাখত। এমনকি হিজরতের আগমুহূর্তেও ওয়াদা পালনার্থে শত্রুদের গচ্ছিত আমানত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব হজরত আলী (রা.)-কে দিয়ে যান।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন দয়ার সাগর এবং অত্যন্ত উদারচেতা। তিনি কাউকে কখনো অভিশাপ দেননি। সর্বাবস্থায় মানুষের মঙ্গল কামনা করতেন। কেউ দোষ করলে তা ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখতেন। ইসলাম প্রচারের প্রাক্কালে কুরাইশদের হাতে কতই না নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। তাদের জুলুম অত্যাচার উৎপীড়ন নিপীড়ন দয়াল নবী সহ্য করেছেন। কিন্তু তাদের অভিশাপ দেননি; বরং আল্লাহর কাছে তাদের ক্ষমার জন্য ফরিয়াদ করেছেন। তিনি সর্বদা বলতেন, ‘আমি মানুষকে অভিশাপ দেওয়ার জন্য আসিনি, আমি এসেছি ক্ষমা এবং দয়া করার জন্য।’ মক্কা বিজয়ের পর কুরাইশরা এতই ভীত হয়েছিল যে, কে কী করবে, কোথায় পালাবে তার কোনো ঠিকঠিকানা ছিল না। কিন্তু দয়ার নবী দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন এবং তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর