শুক্রবার, ২২ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ

সংঘাত কোনোভাবেই কাম্য নয়

ঈদের আগে অগ্রিম বেতন এবং পূর্ণ বোনাসের দাবিতে পাঁচ হাজারেরও বেশি পোশাক শ্রমিক বুধবার পোস্তগোলা ব্রিজ অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। অবরোধের কারণে আটকা পড়ে যায় বিপুলসংখ্যক পণ্যবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন। পুলিশ শ্রমিকদের অবরোধ উঠিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও তাতে তারা পাত্তা দেয়নি। শেষ পর্যন্ত লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের সড়ক থেকে তুলে দেওয়া হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরাও এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। শ্রমিকদের অভিযোগ তাদের এ বছর ৫০ শতাংশ বোনাস দেওয়া হয়েছে। যে কারণে ক্ষোভের সৃষ্টি। পুলিশ সূত্রে বলা হয়, মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ৫০ শতাংশ বোনাস দিয়েছেন। এরপরও তারা চলতি মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। অথচ এ বেতন আগামী মাসে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার কথা। কিন্তু শ্রমিকরা এটি মানছিলেন না। কয়েকবার সড়ক ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও তারা রাজি না হলে পরে পুলিশ অ্যাকশনে যায়। গাজীপুরে শতভাগ ঈদ বোনাসসহ চলতি মাসের বেতন পরিশোধের দাবিতে বুধবার দিনভর বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় এক কারখানার কয়েক কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কসহ আশপাশের সড়কগুলো অবরোধ ও ভাঙচুর করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেতন ও বোনাস নিয়ে শ্রমিক বিক্ষোভ প্রায় নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। সন্দেহ নেই, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের প্রায় প্রতিটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিপাকে পড়েছে। তবে শ্রমিকদের জীবিকার বিষয়টি যে স্পর্শকাতর সেটিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝতে হবে। করোনাভাইরাসজনিত দুর্দিনে শিল্প কলকারখানায় অশান্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়। শ্রমিকরা বেতন ভাতার জন্য আন্দোলন করার নামে সহিংসতার আশ্রয় নিলে তা তাদের স্বার্থের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। আমাদের বিশ্বাস উভয়পক্ষ নিজেদের স্বার্থেই সংঘাত এড়ানোর চেষ্টা করবে। করোনাভাইরাসে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বড় ধরনের ধকলের মুখে পড়েছে। এই বাস্তবতাকে মনে রেখে সংকট উত্তোরণে পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট সবাই সুমতি ও সুবিবেচনার পরিচয় দেবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর