শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মাছের জিন ব্যাংক

প্রশংসনীয় উদ্যোগে সংরক্ষিত হবে দেশি মাছ

মাছের জার্মপ্লাজম সংরক্ষণের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক একটি আধুনিক ধারণা। জিন ব্যাংক মূলত কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদের জেনেটিক উপাদানের সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা। কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদ যখন হুমকির সম্মুখীন হয় তখন জিন ব্যাংকের প্রয়োজন পড়ে। প্রাকৃতিক উৎসে কোনো দেশি মাছ হারিয়ে গেলে সেসব মাছকে পুনরুদ্ধারের জন্য লাইভ জিন ব্যাংক থেকে ব্যবহার করা হয়। সে ক্ষেত্রে লাইভ জিন ব্যাংক থেকে সংশ্লিষ্ট মাছকে হ্যাচারিতে কৃত্রিম উপায়ে পোনা উৎপাদনের মাধ্যমে প্রকৃতিতে ফিরিয়ে আনা হয়। হারিয়ে যাওয়া দেশি মাছ সংরক্ষণে প্রথমবারের মতো গড়ে তোলা হয়েছে লাইভ জিন ব্যাংক। দেশি ২৬০ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ ও উৎপাদন বাড়িয়ে বাণিজ্যিকভাবে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য। এরই মধ্যে ৮৫ দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে লাইভ জিন ব্যাংকে। দেশে এখন বিলুপ্তপ্রায় ৬৪ প্রজাতির মাছ। এগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা এসব মাছ সংরক্ষণ করে উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) এ দেশের বিলুপ্তপ্রায় ভাগনা, দেশি কই, নাপিত কই, গুলশা, খলশে, লাল খলশে, মাগুর, বোয়ালিপাবদা, সরপুঁটি, পুঁটি, শিং, মহাশোল, রুই, বুজুরি টেংরা, ভিটা টেংরা, বাটা, রিটা, মলা, পুইয়া গুতুম, পাহাড়ি গুতুম, ঠোঁটপুইয়া, শালবাইমসহ মোট ৮৫ প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশি সব মাছ এ ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হবে। মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশি মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। বিলুপ্তপ্রায় দেশি মাছের প্রাকৃতিক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার হাওর-বাঁওড়, বিল ও নদ-নদীতে অধিকসংখ্যক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা ও বিলুপ্তপ্রায় মাছের পোনা অবমুক্ত করছে। আমাদের আশা দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে এ লাইভ জিন ব্যাংক অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর