জীবনের মূল্য সবচেয়ে বেশি। আর এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে লকডাউনের মেয়াদ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশে লকডাউনের পর করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করা গেলেও অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। পাশের দেশ ভারতে মহামারী ভয়ংকর আকার ধারণ করায় শঙ্কা থেকে কোনো প্রতিবেশীর দূরে থাকার সুযোগ নেই। ভারতে অবস্থার এতটাই অবনতি ঘটেছে যে অক্সিজেনের অভাবে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক করোনা আক্রান্তের প্রাণপ্রদীপ নিভে যাচ্ছে। অক্সিজেন রপ্তানিকারক দেশ ভারত এখন নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে অন্য দেশের সহায়তা নিতে বাধ্য হচ্ছে। ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেশী এ দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে লকডাউনের মেয়াদ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে ৬ মে থেকে ঢাকাসহ জেলার মধ্যে চলবে গণপরিবহন। কিন্তু সংক্রমণের ভয়াবহতা ঠেকাতে মানুষের দূর যাতায়াত আন্তজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে ট্রেন ও লঞ্চ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা হয়েছে সব ধরনের শিল্পকারখানা। এসব কারখানায় ঈদুল ফিতরের ছুটি তিন দিনের বেশি না দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টায় আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে নাগরিকদের পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। পরে সাত দিন করে দুই দফা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। যার মেয়াদ শেষ হবে আজ ৫ মে মধ্যরাতে। নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিং মল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে শিল্পকারখানা। ঈদের আগে লকডাউন ও দূরযাত্রা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অনেকেই নাখোশ হবেন সন্দেহ নেই। তবে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ হিসেবে সরকার দেশের মানুষের জীবনের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বাধ্য। আমরা আশা করব লকডাউনকালে ঘরের বাইরে ও কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো হেলাফেলার সুযোগ থাকা উচিত নয়।