রবিবার, ২৩ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি

প্রক্সি নয় জোরদার হোক মুক্তির লড়াই

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসলামী জিহাদের সঙ্গে ইসরায়েলিদের ১১ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এ যুদ্ধবিরতিকে দুই পক্ষই তাদের জয় হিসেবে দেখছে। ফিলিস্তিনের গাজায় হামাস সমর্থকরা বিজয় মিছিলও বের করেছে। তেলআবিবের ভাষ্য, ইসরায়েলের ওপর ৪ হাজার রকেট হামলা যারা চালিয়েছে তাদের দমনের মিশন সফল হয়েছে। হামাস ও ইসলামী জিহাদের প্রায় ২০০ সদস্যকে হত্যার কৃতিত্বও তারা জাহির করেছে। হামাস ও ইসরায়েলের সংঘর্ষে কারা জয়ী হয়েছে তা প্রশ্নবিদ্ধ হলেও এতে নিশ্চিতভাবে যে মানবতার পরাজয় ঘটেছে এ এক মহাসত্য। দুই পক্ষের সংঘাতে শিশু-নারীসহ অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনে সংঘাতের বীজ বপিত হয়েছিল শত বছর আগে ওসমানিয়া খেলাফতের আমলে। তারাই প্রথম ফিলিস্তিন ভূখন্ডে ইহুদি বসতি স্থাপনের সুযোগ দেয়। প্রথম মহাযুদ্ধে ওহাবিদের সহায়তায় আরব ভূখন্ডে ব্রিটিশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে হিটলারের নাৎসি বাহিনী লাখ লাখ ইহুদি হত্যা করলে যুদ্ধ শেষে ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন এলাকায় ইসরায়েল নামের ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। জাতিসংঘকে তারা এ ব্যাপারে শিখ-ী হিসেবে ব্যবহার করে। ব্রিটিশরা ফিলিস্তিনের ৫৫ ভাগ ইসরায়েল ও ৪৫ ভাগ ফিলিস্তিনিদের জন্য রেখে দুটি স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার রূপরেখা ঘোষণা করে। ফিলিস্তিনের ৫ ভাগ এলাকা পবিত্র নগরী জেরুজালেমকে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রস্তাব করা হয়। ইহুদিরা তৎক্ষণাৎ প্রস্তাবটি গ্রহণ করে ইসরায়েল নামের রাষ্ট্রের জন্ম দেয়। আরব দেশগুলো প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে নাস্তানাবুদ হয়। তার পরও আরও দুবার যুদ্ধ হয়েছে এবং তার ফলাফলও অভিন্ন। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনিরা যে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল এখন সেটুকু অর্জনের জন্য তাদের জীবন দিতে হচ্ছে। হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি মানবতার জন্য স্বস্তিদায়ক খবর হলেও এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। এজন্য প্রয়োজন স্বাধীন ফিলিস্তিন। তা অর্জনে ফিলিস্তিনিদের দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। ইসরায়েল ও তার অর্থপুষ্টদের প্রক্সি লড়াইয়ের বদলে ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তিসংগ্রামকে ইপ্সত লক্ষ্য অর্জনে শানিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর