শুক্রবার, ৪ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

মেগা বাজেট

জীবন-জীবিকাকে গুরুত্ব দেওয়া প্রশংসনীয়

করোনাকালে যখন সারা দুনিয়ার প্রতিটি দেশের অর্থনীতি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে তখন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। এটি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের তৃতীয় এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৩তম বাজেট। স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ এক যুগের সাফল্য-ব্যর্থতার চিত্র রয়েছে বাজেট বক্তৃতায়। শুধু তাই নয়, আগামী বছরটি কীভাবে চলবে, জনগণকে কষ্ট না দিয়ে কীভাবে আয়বর্ধক কর্মসূচি নেওয়া যায় তারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে সযত্নভাবে। ১৫ মাস ধরে চলা করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে দেশের বেশির ভাগ মানুষের আয় কমেছে। নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন আড়াই কোটি মানুষ। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ লোক। ফলে প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা গুরুত্ব পেয়েছে। করোনার মারণাঘাতে অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশেও সরকারের আয়ের খাত হ্রাস পেয়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এর পরও বিশালাকৃতির বাজেট পেশ করার সাহস দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার এ বাজেটের অনুষঙ্গ হিসেবে বিশাল অঙ্কের ঘাটতিকেও মেনে নেওয়া হয়েছে। সাধ ও সাধ্যের জাতীয় বাজেট প্রণয়নে অর্থমন্ত্রীকে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার ঘাটতি দেখাতে হয়েছে। ঘাটতির এই পরিমাণ জিডিপির ৬ শতাংশের বেশি। বাজেট ঘাটতি পূরণ হবে বৈদেশিক ঋণ ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। বিশাল পরিমাণের ঘাটতি বাজেট পেশ করা হলেও সরকারের জন্য সুখবর হলো করোনাকালে বিভিন্ন খাতে আয় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়লেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ এখন সর্বকালের সবচেয়ে হৃষ্টপুষ্ট। দেশের  ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহত্তম বাজেটে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রয়েছে বিশেষ বরাদ্দ। ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙা করতে করপোরেট করহার কমানোর বাস্তবমুখী সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান কর অবকাশের মেয়াদ ও আওতা বাড়ানোও একটি প্রশংসনীয় দিক। বাজেট প্রণয়নে অর্থমন্ত্রী মানুষের জীবন-জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এ উদ্দেশ্যে কৃষি খাতকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টিও প্রশংসার দাবিদার। পেশকৃত বাজেট কতটা কল্যাণ বয়ে আনবে তা নির্ভর করছে এর যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর। যেটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর