শুক্রবার, ৬ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

বজ্রপাত

জনসচেতনতার বিকল্প নেই

বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার পাশাপাশি দুনিয়াজুড়ে বেড়েছে বজ্রপাত। বাংলাদেশে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যেসব দেশে বজ্রপাত সবচেয়ে বেশি হচ্ছে বাংলাদেশ তার শীর্ষে। বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল পদ্মা নদী বেষ্টিত নারায়ণপুর থেকে নৌকাযোগে বরযাত্রী নিয়ে বৌভাত অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় পাশের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা এলাকায় পদ্মায় বজ্রপাতে পাঁচ মহিলাসহ ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন নারী, দুই শিশুসহ আরও ১৩ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়ার ধরন বজ্রপাতের জন্য অনুকূল, তাই বজ্রপাতে মৃত্যুও বাড়ছে। বাংলাদেশে বড় গাছ, বিশেষ করে উঁচু তাল গাছের সংখ্যা কমে যাওয়াও বজ্রপাতে মৃত্যু বৃদ্ধির একটি কারণ। বজ্রপাত হয় উঁচু স্থানে। কোনো বাড়িতে উঁচু তাল গাছ থাকলে সে বাড়ির মানুষ বজ্রপাতের ঝুঁকি থেকে তুলনামূলক নিরাপদ থাকে। এ ছাড়া ভবনে বা বাড়িতে উঁচু করে বজ্রনিরোধক দন্ড লাগালে বজ্রপাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বড় বড় ভবনের কারণে শহরে বজ্রপাতে মৃত্যু কম। অনেক ভবনে বজ্রনিরোধক দন্ড থাকে, কোনোটিতে রড বের করা থাকে। বজ্র এসব ভবনে পড়ে মাটিতে চলে যায়। বাংলাদেশে বজ্রপাতে প্রাণহানি বেশি ঘটছে গ্রাম এলাকায়- কৃষক মাঠে কাজের সময় কিংবা নদীতে বা হাওরে মাছ ধরার সময়। জনসচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে এড়ানো যাবে। এজন্য ফসলের মাঠের ধারকাছে বৃষ্টির সময় আশ্রয় নেওয়ার নিরাপদ শেড নির্মাণ করতে হবে। নদী বা হাওর এলাকায়ও এ ধরনের আশ্রয় কেন্দ্র থাকা দরকার। দেশে তাল গাছজাতীয় উঁচু গাছ ব্যাপক হারে রোপণ এবং প্রতিটি বাড়িতে বজ্রনিরোধক দন্ড লাগানোর ব্যবস্থা করলে বজ্রপাতে হতাহতের বিপদ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। বিশেষত মোবাইল টাওয়ারগুলোয় বজ্রনিরোধক দন্ড লাগানো বাধ্যতামূলক করা দরকার। বজ্রপাতকে ভয় করার বদলে ব্যাপক জনসচেতনতার মাধ্যমে নিরাপদ অবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর