বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্রাইমজোন মিরপুর

বখাটেদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর হোন

রাজধানীর মিরপুরের পরিচিতি সেই পাকিস্তান আমল থেকে ক্রাইমজোন হিসেবে। মুক্তিযুদ্ধে হাজার হাজার বাঙালি বধের ঘটনা ঘটিয়েছে ‘বিহারি’ নামের কৃতঘ্নরা। মিরপুরে অবাধে ঘটত বাঙালি নারীর সম্ভ্রমহানি। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি দখলদারদের আত্মসমর্পণের পর সারা দেশে লাল সবুজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হলেও দীর্ঘদিন ধরে মিরপুরের নিয়ন্ত্রণ ছিল বিহারি নামের পাকিস্তানিদের হাতে। স্বাধীনতার পর মিরপুর রাজধানীর বর্ধিষ্ণু এলাকায় পরিণত হয়। বিহারি নামের আটকে পড়া পাকিস্তানিরা ওই এলাকায় এখনো বসবাস করলেও তাদের আগের দাপট নেই বললেই চলে। তবে স্বাধীনতার আগে থেকেই ক্রাইমজোন হিসেবে মিরপুরের যে কুখ্যাতি তা গত ৫০ বছরেও খুব একটা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। গত তিন মাসে মিরপুরের সাতটি থানা এলাকা থেকে ৪২৪ মেয়েশিশু-কিশোরী নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মিরপুর থেকে আরও ৭৫ শিশু-কিশোরী নিখোঁজ হওয়ার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সব নিয়ে নিখোঁজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ শর বেশি। এর মধ্যে ৩৯৫ কিশোরী এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে বা নিজেরাই পরিবারে ফিরে এসেছে। অন্যদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। নিখোঁজ শিশু-কিশোরীদের একাংশ ছেলেবন্ধুদের সঙ্গে ঘর ছাড়লেও ছেলেদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগের ঘটনা নেই বললেই চলে। প্রায় সব জিডিই করেছেন মেয়েশিশু-কিশোরীদের অভিভাবকরা। শিশু-কিশোরীদের ঘর ছেড়ে পালানোর প্রবণতা রোধে মিরপুরে সামাজিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত। কিশোরী-তরুণীদের উধাও হওয়ার প্রবণতা থামাতে মিরপুরের সাতটি থানা এলাকার কিশোর ও তরুণদের ওপর সামাজিক নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। বখাটের অভয়ারণ্য বৃহত্তর মিরপুরের আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে কিশোর গ্যাংগুলোর অস্তিত্ব ভেঙে দিতে হবে শক্ত হাতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর