সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
ইতিহাস

দুরন্ত সেই শিশু

১৩৩৬ সালের কথা। গভীর রাত। উজবেকিস্তানের প্রতিটি ঘরের বাতি নিভে গেছে। গভীর ঘুমে বিভোর মানুষ। ঘুম নেই শুধু একটি ঘরে। সমরখন্দ থেকে প্রায় ৫০ মাইল দূরে কেশ নগরীর স্কারদু শহরের সবচেয়ে বড় বাড়িতে তখনো নিভুনিভু অবস্থায় প্রদীপ জ্বলছে। ঘরের বাইরে উঠানে অস্থির পায়চারি করছেন বাড়ির মালিক তারাগে। তিনি এ অঞ্চলের ভূস্বামী। হঠাৎ তার স্ত্রীর প্রসব বেদনা ওঠায় তিনি চিন্তিত। শহরে লোক পাঠানো হয়েছে ধাত্রীর খোঁজে, কিন্তু তারা এখনো ফিরে আসেনি। মনে মনে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিলেন সৃষ্টিকর্তা। ভোরের প্রথম আলোর সঙ্গে ভূমিষ্ঠ হলো এক পুত্রসন্তান। নাম রাখা হলো ‘তৈমুর’, যার অর্থ ‘লোহা’। ইউরোপে তিনি ‘তিমুর’ বা ‘তিমুরলেন’ নামে পরিচিত। হয়তো তাঁর নামকরণের সার্থকতা প্রমাণের জন্যই তৈমুর বেশ দুরন্ত এবং সাহসী কিশোর হিসেবে বেড়ে ওঠেন। এমনকি ছোটখাটো ডাকাত বাহিনীও গড়ে তোলেন তিনি। এলাকা ঘুরে ঘুরে ছোটখাটো জিনিস লুট করে বেড়াত তারা। দেখতে দেখতে তৈমুর যৌবনে পদার্পণ করেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শক্তি, সাহস দুটোই বৃদ্ধি পায়। এবার সত্যিকারের দস্যুদল গঠন করেন তিনি। তৈমুরের দাপটে এলাকার ধনীরা আতঙ্কিত থাকত। যুবক তৈমুরের ডান পা এক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যায়। কিন্তু ঠিক কীভাবে তিনি খোঁড়া হয়েছিলেন তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। একদল ইতিহাসবিদের মতে একবার তৈমুর দলবল নিয়ে এক বণিকের ভেড়ার পাল লুট করতে যান। কিন্তু ফেরার পথে তৈমুর রাখালদের তীরের আঘাতে মারাত্মক জখম হন। তাঁর ডান হাত ও ডান পা চিরতরে অকেজো হয়ে যায়। এর পর থেকে তিনি ‘খোঁড়া তৈমুর’ বা ‘তৈমুর-ই-লং’ নামে পরিচিত হন।       

জাফর খান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর