রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জনভোগান্তির ধর্মঘট

এ প্রবণতার অবসান কাম্য

পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের যথেচ্ছার কাছে গত দুই দিন জিম্মি ছিল সারা দেশের মানুষ। পরিবহন ধর্মঘটে অশেষ ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছে লাখ লাখ যাত্রী। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কোনো নোটিস ছাড়াই ধর্মঘট ডেকে জনভোগান্তি নিশ্চিত করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের অশুভ জোট। তাদের যুক্তি, লিটারে ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বৃদ্ধি যানবাহন চলাচলের খরচ বাড়াবে। তারা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার নতুবা যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি যানবাহনের ব্যয় বৃদ্ধি করবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কোনো আলোচনায় না বসে জোর যার মুল্লুক তার নীতি অনুসরণে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা কতটা যৌক্তিক ভেবে দেখার বিষয়। প্রশ্ন ওঠে, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বাস ভাড়া বৃদ্ধির পাঁয়তারা করতে যারা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন তারা আট বছর আগে ডিজেলের দাম হ্রাস করা হলেও বাস ভাড়া সে অনুপাতে কমাননি কেন? ধর্মঘট ডাকা যে কোনো মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে তার উদ্দেশ্য যদি হয় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে সুবিধা আদায় তা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। আমরা নীতিগতভাবে জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখার পক্ষে। তবে স্বীকার করতেই হবে, দেশ সব ধরনের জ্বালানির ক্ষেত্রে আমদানিনির্ভর। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম যে হারে বেড়েছে তাতে মূল্যবৃদ্ধির বিকল্প খুঁজে পাওয়া সত্যিকার অর্থেই কঠিন। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাও সরকারের সঙ্গে বৈঠকে মূল্যবৃদ্ধির কোনো বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। আমরা আশা করব ভবিষ্যতে পরিবহনসংক্রান্ত যে কোনো সমস্যায় তারা সরকার তথা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধানে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করবেন। ডিজেলসহ জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ যাত্রীদের কোনো দায় নেই। তাদের জিম্মি করে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে যা-ই হোক সুবুদ্ধির পরিচয় দেওয়া হয়নি। এ প্রবণতার অবসান কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর