বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

হাওরের ফসলহানি

কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে

হাওরে এ বছর ফসলের যে ক্ষতি হয়েছে তা এক কথায় অবর্ণনীয়। করোনার আঘাত মোকাবিলা করে দেশ যখন মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষকেও ভয়াবহ সংকটে ঠেলে দেয়। জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল ও গমের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর বিষনিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করে। এ মহাবিপদের সময় ত্রিশঙ্কু অবস্থার সৃষ্টি করেছে আগাম বন্যায় দেশের হাওর এলাকায় ফসল মার খাওয়ার ঘটনা। হাওর এলাকায় আগাম বন্যা এলেই নষ্ট হয়ে যায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলা পরিশ্রমের ফসল। বন্যা রোধের জন্য নির্মিত বাঁধে শুভঙ্করের ফাঁকি থাকায় শুধু ওই এলাকা নয়, সারা দেশকেই খাদ্যাভাবের দিকে ঠেলে দেয়। এ বছরও আগাম বন্যায় ভেসে গেছে হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল। সর্বশেষ সুনামগঞ্জে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে হালির হাওরও। নেত্রকোনায় মাছ ধরতে বাঁধ কেটে দেওয়ায় পানির নিচে ডুবে গেছে কৃষকের বিস্তর জমি। সোমবার মধ্যরাতে হাওরের আছানপুর বাঁধ ভেঙে প্রচ- বেগে পানি ঢুকতে শুরু করে। রাত পেরিয়ে বিকাল হতেই তলিয়ে যায় বৃহৎ এ হাওরটি। চলতি মৌসুমে হালির হাওরে ৫ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছিল কৃষক। ইতোমধ্যে হাওরের প্রায় ৬০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকায় তলিয়ে গেছে অবশিষ্ট ধান। বাঁধ ভাঙার আকস্মিক ঘটনায় বহু কৃষকের মাড়াই করা ধান পানিতে ভেসে গেছে। সুনামগঞ্জে

৩১টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন। হাওরসমৃদ্ধ অন্যান্য জেলায়ও ফসলহানি হয়েছে ব্যাপকভাবে। হাওর এলাকার কৃষকের দুর্দিনে তাঁদের পাশে সরকারকে দাঁড়াতে হবে দৃঢ়ভাবে। হাওরের বাঁধ সুরক্ষায় নিতে হবে কৃষকবান্ধব নীতি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর