শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বন্যার এ মহাবিপদে ধৈর্য ধারণ করতে হবে

আবদুর রশিদ

বন্যায় দেশের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক কোটি মানুষ এখন বিপদের সম্মুখীন। এ অবস্থায় আমাদের সবাইকে আল্লাহর রহমতের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যারা বন্যার্ত তাদের ধৈর্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আল কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মোমিনরা! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য কামনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৩) এ আয়াতে আল্লাহ তাঁর সাহায্য লাভের উপায় হিসেবে সালাতের পাশাপাশি ধৈর্যশীলতাকে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা তিন ভাগে বিভক্ত। ক. বিপদের সময় ধৈর্য খ. আল্লাহর নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে ধৈর্য গ. পাপ থেকে বিরত থাকার ক্ষেত্রে ধৈর্য।’ ইমান সম্পর্কে রসুল তাঁকে প্রশ্ন করলে এক কথায় বলেছিলেন, ‘ইমান হচ্ছে ধৈর্যধারণ।’ তাই ধৈর্যশীলরা চরম সংকট ও বিপদের সময়ও ইমানের ওপর অটল থেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মোমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক। তার প্রতিটি কাজই তার জন্য কল্যাণকর। এ সৌভাগ্য মোমিন ছাড়া আর কারও জীবনে হয় না। সে দুর্দশাগ্রস্ত হলে ধৈর্য ধারণ করে, তা তার জন্য কল্যাণকর। সুদিন দেখা দিলে সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তা-ও তার জন্য কল্যাণকর।’ (মুসলিম) যারা বিপদাপদে ধৈর্য বজায় রাখে তারা আল্লাহর কাছে পুরস্কৃত হবে। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির যে কোনো রোগব্যাধি, দৈহিক শ্রান্তি, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও পেরেশানি আসে এমনকি তার দেহে কাঁটা বিঁধলেও এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (বুখারি) আল্লাহ ধৈর্যশীলদের পছন্দ করেন তাই তিনি ধৈর্যশীলদের সঙ্গেই থাকেন। ধৈর্যশীলদের প্রতি কোরআনে উল্লিখিত প্রতিশ্রুতি হলো, ‘আল্লাহ কষ্টের পর স্বস্তি দেবেন।’ (সুরা তালাক, আয়াত ৭) এ আয়াতের শিক্ষা হচ্ছে কষ্ট ও বিপদের সময় অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে; তাহলে জীবনের কাক্সিক্ষত সুখ-শান্তি আসবেই। তবে ধৈর্যধারণের কাজটি যে অত সহজ নয় তা-ও কোরআন উল্লেখ করেছে, ‘তোমার ওপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধারণ কর। নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ়সংকল্পের কাজ।’ (সুরা লুকমান, আয়াত ১৭) ধৈর্যধারণের মতো কঠিন কাজের পুরস্কারও অপরিসীম। আল্লাহ বলছেন, ‘নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের অগণিত পুরস্কার দেওয়া হবে।’ (সুরা জুমার, আয়াত ১০) মানবজীবনের সফলতার সোপান হলো ধৈর্য। আল্লাহ বলছেন, ‘হে ইমানদারগণ! ধৈর্য ধারণ কর এবং মোকাবিলায় দৃঢ়তা অবলম্বন কর, আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক যাতে তোমরা সফলতা লাভে সমর্থ হতে পার।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ২০০) সুতরাং জীবনের উন্নতি, সফলতা ও আল্লাহর নৈকট্যলাভের একটি বড় মাধ্যম হচ্ছে ধৈর্য। আল্লাহ আমাদের ধৈর্যশীল হওয়ার তৌফিক দান করুন।

লেখক :  ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর