বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট

জনগণের টাকা অপচয়ের তদন্ত হোক

ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটির বাস্তবায়ন ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কবে শেষ হবে তা এখনো এক বড় মাপের প্রশ্ন। সঠিক সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর নির্মাণ ব্যয় দ্বিগুণের বেশি দাঁড়িয়েছে। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে নির্মাণ ব্যয় বাড়ানো প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তি ও ঠিকাদারদের মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিআরটির ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় হয়নি। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ায় যেখানে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহির মধ্যে আনার কথা তার বদলে নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। স্মর্তব্য, ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়কে যানজট নিরসনে ২০১২ সালে সরকার দেশের প্রথম বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প হাতে নেয়, যা ২০১৬ সালে শেষ হওয়ার কথা। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গেজুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজ করছে। ২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট রুট নির্মাণ কাজ চলতে থাকায় ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়ক এখন অসংখ্য খানাখন্দে ভর্তি। মাঝরাতেও যাত্রীদের যানজটে আটকে থাকতে হয়। দুই অংশ ভাগ করে কাজ চলছে প্রকল্পের। এক অংশে তিন দফা এবং আরেক অংশে দুই দফা বেড়েছে প্রকল্পের মেয়াদ। প্রাথমিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। মেয়াদ বাড়ায় ব্যয় দ্বিগুণের বেশি বেড়ে ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বলা হচ্ছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সংকটের কারণে খুঁড়িয়ে চলছে প্রকল্পের কাজ। সোজা কথায় দেশের মানুষের ২ হাজার ১০০ কোটির বেশি টাকা গচ্চা যাচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে। একইভাবে প্রায় এক দশক ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভোগান্তিতে ভুগছে লাখ লাখ মানুষ। বিআরটি বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা ও ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। জনগণের টাকার শ্রাদ্ধ করে নিজেদের পকেট পূর্তিতে কারা জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর