বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বৃষ্টি মহান আল্লাহর এক অপূর্ব সৃষ্টি

আবদুল্লাহ আল মামুন আশরাফী

বৃষ্টি মহান আল্লাহর এক অপূর্ব সৃষ্টি

বৃষ্টি। আল্লাহ-প্রদত্ত এক অবর্ণনীয় সৌন্দর্যের নাম। বৃষ্টি মানেই ভালোলাগা। বৃষ্টি মানেই হৃদয় তল্লাটে এক স্নিগ্ধ সমীরণ বয়ে যাওয়া। বৃষ্টি মানেই প্রকৃতির মাঝে এক নবজাগরণ তৈরি হওয়া। বৃষ্টি মানেই চারপাশটা সজীবতার অনিন্দ্য সৌন্দর্যে ছেয়ে যাওয়া। বৃষ্টি মহান আল্লাহর সৃষ্টিকুশলতার এক অনুপম নিদর্শন। মহান রবের এক অপূর্ব সৃষ্টি আকাশ থেকে ঝুমঝুম রবে নেমে আসা বারিধারা। বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ মৃতপ্রায় ভূমি সজীব করে তোলেন। ফলে প্রকৃতি নতুন উদ্যমে জেগে ওঠে। আকাশ থেকে অঝোর ধারায় নেমে আসা এ বৃষ্টির মাঝে জ্ঞানবান চিন্তাশীলদের জন্য রয়েছে অনেক শিক্ষা, আছে সীমাহীন চিন্তার খোরাক।

কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাঁর (আল্লাহ) একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের দেখান বিজলি, ভয় ও আশা সঞ্চারকরূপে এবং আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করেন, অনন্তর তা দ্বারা শুষ্ক নির্জীব ভূমি সজীবতা দান করেন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন আছে সেসব লোকের জন্য যারা বুদ্ধি কাজে লাগায়।’ (সুরা আর রুম, আয়াত ২৪) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি আপনি তাদের (মক্কার মুশরিকদের) জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ করে, এরপর তা দ্বারা ভূমি নির্জীব হয়ে যাওয়ার পর সঞ্জীবিত করেন? তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা বোঝে না।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত ৬৩) এভাবে কোরআনের বহু আয়াতে বৃষ্টির উপকারিতা সম্পর্কে নির্দেশনা রয়েছে। বৃষ্টি মানুষের মন প্রফুল্ল করে। হৃদয়জুড়ে আনন্দের অনুভূতি নিয়ে আসে। আল্লাহর রহমতে প্রকৃতিতে প্রকাশ পায় স্বস্তির ছাপ। এ বৃষ্টির সময় একজন মোমিনের কিছু করণীয় আমল রয়েছে, যার মাধ্যমে একজন মোমিন আল্লাহর এ বিশেষ নিয়ামত যেমন উপভোগ করতে পারবে, তেমনি এ সময়টুকু তাঁর ইবাদতে শামিল হবে। বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে বৃষ্টির সময় আমাদের করণীয় কিছু আমল নিয়ে কথা বলব।

১. আল্লাহর কাছে রহমত প্রার্থনা করা : বৃষ্টি সাধারণত রহমতের বার্তা বয়ে আনলেও মাঝেমধ্যে এ বৃষ্টিই আবার দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ কারণে রসুলুল্লাহ (সা.) বৃষ্টি দেখলেই আল্লাহর দরবারে উপকারী বৃষ্টির জন্য দোয়া করতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, যখন বৃষ্টি হতো রসুলুল্লাহ (সা.) বলতেন, ‘আল্লাহুম্মা সয়্যিবান নাফিআহ’, (অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি এ বৃষ্টিকে প্রবহমান এবং উপকারী করে দাও)। (নাসায়ি) কখনো ঝড়ো হাওয়া বইলে আল্লাহর দিকে গভীরভাবে মনোনিবেশ করে তাঁর ভয়ে কম্পমান থাকা উচিত। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি এ বিষয়ে তাঁকে (রসুলুল্লাহ) জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার আশঙ্কা হয়, আমার উম্মতের ওপর কোনো ‘আজাব’ এসে পতিত হয় নাকি। তিনি বৃষ্টি দেখলে বলতেন, ‘রহমাতান’ এটা (আল্লাহর) রহমত। (মুসলিম)

 

লেখক : খতিব, আউচপাড়া জামে মসজিদ, টঙ্গী, গাজীপুর

সর্বশেষ খবর