শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আল্লাহকে মনেপ্রাণে ভয় কর...

মো. আমিনুল ইসলাম

আল্লাহকে মনেপ্রাণে ভয় কর...

প্রত্যেক মোমিন মুসলমানের উচিত সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করা, তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং বিপদে ধৈর্য ধারণ করা। যাদের মনে আল্লাহভীতি কাজ করে তারা কখনো অন্যায়, অপরাধ করে না এবং এরাই আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সেই দিনটিকে ভয় কর যেদিন তোমাদের সবাইকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে, এরপর সেদিন প্রত্যেকে পাবে তার নিজ নিজ কর্মফল। আর সেদিন তাদের ওপর কোনো জুলুম করা হবে না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৮১) এটি কোরআনের সর্বশেষ আয়াত বলে বিবেচিত হয়। আল্লাহ এখানে তাঁর বান্দাদের নসিহত করে বলেছেন, এ দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, এখান থেকে তোমাদের সবাইকে চলে যেতে হবে, সুতরাং তোমরা আমাকে ভয় কর ও সেদিনের ব্যাপারে সদা সতর্ক হও। কারণ তোমাদের কৃতকর্মের জন্য সেদিন তোমাদের শাস্তি বা পুরস্কার দেওয়া হবে। আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে মানুষ! তোমরা যারা ইমান এনেছ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা আমার সাহায্য প্রার্থনা কর। অবশ্যই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ১৫৩) এ আয়াত থেকে আমরা সহজে বুঝতে পারি সবর ও সালাতের মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যার প্রতিকার পাওয়া এবং আল্লাহর সান্নিধ্য  লাভ সম্ভব। আল্লাহ সবরকারী বান্দাদের ভালোবাসেন এবং তাদের সঙ্গে থাকেন। আল্লাহ সব জানেন, দেখেন। কারণ তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের জন্য জলে স্থলে সর্বত্র বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে, মূলত আল্লাহ তাদের কিছু কাজকর্মের জন্য তাদের শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করাতে চান, আশা করা যায় এর ফলে তারা সেসব কাজ থেকে ফিরে আসবে।’ (সুরা রুম, আয়াত ৪১) এই যে পৃথিবীব্যাপী এত দুর্যোগ, এত রোগবালাই, ভূমিধস, বন্যা সব কিছুর জন্যই দায়ী মানুষের কৃতকর্ম। পৃথিবীর এত হানাহানি, রক্তপাত, যুদ্ধ সব কিছুর মূলে রয়েছে শয়তানের প্ররোচনা। কোরআনে আল্লাহ ছয়টি জাতিকে ধ্বংস করার কথা উল্লেখ করেছেন। এরা হলো- নুহ (আ.)-এর জাতি, আদ, সামুদ, লুত (আ.)-এর জাতি, মাদিয়ান ও কওমে ফেরাউন। আল্লাহর অবাধ্যতার জন্যই তাদের ধ্বংস করা হয়েছিল। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল? তাদের অধিকাংশ মুশরিক ছিল।’ (সুরা রুম, আয়াত ৪২) অর্থাৎ এরা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব ও তাঁর প্রতি আনুগত্য অস্বীকার করে নিজেদের ইচ্ছা ও আনুগত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং এর ফলে নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছিল। আল্লাহ বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর জন্য সত্য ও ন্যায়ের ওপর সাক্ষী হয়ে অবিচলভাবে দাঁড়িয়ে থাক, বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের দুশমনি যেন তোমাদের এমনভাবে প্ররোচিত না করে যে এর ফলে তোমরা আর তাদের সঙ্গে ন্যায় ও ইনসাফ করবে না, তোমরা ইনসাফ কর, কারণ এ কাজটি আল্লাহকে ভয় করে চলার অধিক নিকটবর্তী, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, অবশ্যই আল্লাহ তোমাদের কর্মকান্ড সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত ৫) এ আয়াতে সুবিচারের প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি ন্যায় সাক্ষ্যদানের প্রতিও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।  আল্লাহভীতিই মানুষকে সব সৎকর্ম করার কাজে অনুপ্রাণিত করে। কারণ আল্লাহ মানুষের সব কৃতকর্মের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অবহিত।

আল্লাহ আরও বলেন, ‘হে রসুল! আপনি বলে দিন যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমার অনুসরণ কর, এর ফলে আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসতে থাকবেন আর আল্লাহ তোমাদের অপরাধগুলো মার্জনা করে দেবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত ৩১)

                লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার

সর্বশেষ খবর