বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পর্যটন পরিবেদনা

মানসিক দীনতার অবসান ঘটাতে হবে

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি/সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি। নিজেদের দেশ নিয়ে আমাদের গর্বের অভাব না থাকলেও বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। করোনার আগে ২০১৯ সালে বৈশ্বিক জিডিপিতে পর্যটনের অবদান ছিল ১০.৩ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশের জিডিপিতে পর্যটনের অবদান ২.২ শতাংশ মাত্র। জঙ্গি মদদকারী রাষ্ট্র হিসেবে সমালোচিত পাকিস্তানেও পর্যটন আয় বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় চার গুণ। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং পার্বত্য তিন জেলার অপরূপ প্রাকৃতিক নৈসর্গ এ ক্ষেত্রে কাজে লাগছে না। অসংখ্য ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনাসহ পর্যটনের অপার সুযোগ থাকার পরও বিদেশি পর্যটক টানতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। শুধু অভ্যন্তরীণ পর্যটক দিয়েই টিকে আছে এ সম্ভাবনাময় খাত। বিদেশি পর্যটকের অভাবে আসছে না কাক্সিক্ষত বৈদেশিক মুদ্রা। জিডিপিতে অবদানের ক্ষেত্রেও আশপাশের দেশ থেকে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশের পর্যটন। করোনার কারণে পর্যটন খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও ২০২১ সালে বিদেশি পর্যটক থেকে ভারত ৮ হাজার ৮০০ মিলিয়ন, থাইল্যান্ড ৩ হাজার ৯০০ মিলিয়ন, মালদ্বীপ ২ হাজার ১৬০ মিলিয়ন, শ্রীলঙ্কা ৩০৫.২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। সেখানে বাংলাদেশ আয় করেছে মাত্র ১৬৭.২ মিলিয়ন ডলার, যা মিয়ানমারের চেয়েও অনেক কম। করোনার আগে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বিদেশি পর্যটক থেকে আয় করে ৩৬৯.৬ মিলিয়ন ডলার, যখন থাইল্যান্ডের আয় ছিল ৬২ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ডলার। পর্যটন খাতে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সব কিছুর আগে পর্যটনবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকদের দেখা হয় ভিন্নগ্রহের জীব হিসেবে। এ অসভ্য মানসিকতার ইতি ঘটাতে হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। মানসিক দীনতার কারণে বাংলাদেশ বিশ্বপরিসরে পিছিয়ে পড়া দেশে পরিণত হয়েছে।

এ লজ্জা ঝেড়ে ফেরতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর