শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

সমস্যার নগরী ঢাকা

সমাধানের পথ খুঁজতে হবে

ঢাকা দুনিয়ার অন্যতম বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশের রাজধানী। জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম মেগাসিটি। নাগরিক সুবিধার তলানিতে ঠেকা এ নগরীতে প্রতিদিন জীবিকার টানে থিতু হচ্ছে ২ হাজার মানুষ। বছরে রাজধানীর জনসংখ্যায় যুক্ত হচ্ছে অন্তত ৭ লাখ। তাদের পুনর্বাসন ও জীবনমান উন্নয়নে দুই সিটি করপোরেশন কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। কর্মসংস্থানের বিকেন্দ্রীকরণ না হওয়ায় রাজধানীসহ বড় শহরগুলোয় মানুষ ঠাঁই নিচ্ছে। গবেষণা রিপোর্ট বলছে, ২০৫০ সালে দেশের ৭০ ভাগ মানুষ শহরে চলে আসবে। অথচ এখনই কাক্সিক্ষত মানের কোনো সেবা দিতে পারছে না সিটি করপোরেশনসহ সেবা সংস্থাগুলো। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের তথ্য বলছে, রাজধানীতে বাড়তি মানুষের চাহিদার জোগান দিতে প্রতিদিন রাস্তায় নামছে ৫ শতাধিক যানবাহন। এতে শব্দদূষণের মাত্রা আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বাতাসে ক্ষতিকর সূক্ষ্ম বস্তুকণা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। যানজটে প্রতিদিনই নাকাল হচ্ছে নাগরিকরা। বাসাবাড়িতে কখনো গ্যাস থাকে না, কখনো থাকে না বিদ্যুৎ। পানির জন্য রাস্তায় নামতে হয় নাগরিকদের। রাজধানীর খালগুলো দখল, ভরাট ও বর্জ্যে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানি আটকে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। নগরীর অধিকাংশ খেলার মাঠ অরক্ষিত, অবরুদ্ধ। এ ছাড়া ডেঙ্গু, পয়ঃনিষ্কাশনের জটিলতা, দূষিত পরিবেশ, মাত্রাহীন ঘনবসতি, ভেজাল খাবারসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত ঢাকার বাসিন্দারা। আন্তর্জাতিকভাবে ঢাকার জীবনধারণের মান ও হালহকিকত নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। মেগা সিটি নিয়ে যতই গর্ব করা হোক না কেন ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে কম টেকসই নগরীগুলোর মধ্যে চতুর্থ। ২২৮টি দেশ ও অঞ্চলের ৩ হাজার ৬৩৮টি প্রশাসনিক জেলা ও ২৫০টি শহরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ঢাকার শিরস্ত্রাণে ওই গ্লানিকর পালক লাগিয়েছে সিডনিভিত্তিক একটি সংস্থা। ঢাকাকে এ দুরবস্থা থেকে রক্ষায় সরকার ও দুই সিটি করপোরেশনকে একযোগে কাজ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর