বৃহস্পতিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্যাপাসিটি চার্জ

এ ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোকে দেওয়া ক্যাপাসিটি চার্জ শুধু বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নয়, সরকারের জন্যও বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো বিদ্যুৎ না নিয়েই গত ১১ বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ সরকার বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্যাপাসিটি চার্জের এই বোঝা বহন করতে হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল আইএমএফ কর্তৃপক্ষ সরকারকে সতর্ক করেছে। তারা বৈদেশিক মুদ্রায় ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকারকে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনীতির কথা বিবেচনা করে ক্যাপাসিটি চার্জ থেকে ভারমুক্ত হতে হবে। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তিও পর্যালোচনা করতে হবে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতে এখন কৃচ্ছ্রতা সাধনের বিকল্প নেই। দেশে বর্তমানে সব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সম্মিলিতভাবে প্রতিদিন ২৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত দিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারের করা ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুৎ কেনা না হলেও ভাড়া বাবদ নির্দিষ্ট হারে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়। আর এই ৯০ হাজার কোটি টাকা কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই অর্জন করেছে। সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর দুই বছর পরও জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়নি পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কেন্দ্রটি সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। কবে নাগাদ তারা পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে তার নিশ্চয়তা নেই। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করা গেলে কেন্দ্রটি পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার সুযোগ পাবে।  তার আগে সরকারকে ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা টানতে হবে। বর্তমানে মাসে এ খাতে ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। এ বোঝা লাঘবে সরকারকে চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের পথে যেতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর